কেন্দ্রীয় বাহিনীর অনুপস্থিতি, ভোট লুটের অভিযোগ, “খনি অঞ্চলের সারাদিনের চিত্র”
আমার কথা, অন্ডাল, ৮ জুলাই:
খনি অঞ্চলে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোট বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে সম্পূর্ণ হয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। বিরোধীদের অভিযোগ নির্বাচনের নামে প্রহসন হল, ভোট লুট করলো শাসকদল। মানুষ ভোট দিয়েছে, পাল্টা দাবি শাসকদলের।
শনিবার সকাল সাতটা থেকে শুরু হয়েছিল ত্রিস্তর গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সরকারি মতে পাঁচটা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া, কিন্তু এরপরও বিভিন্ন জায়গায় বুথে ভোটারদের লাইন দেখা গেছে। খনি অঞ্চলের অন্ডাল, পাণ্ডবেশ্বর, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকে এদিন সকাল থেকেই দেখা গেছে ভোটারদের লম্বা লাইন। সরকারি মতে বিকেল তিন-টা পর্যন্ত অন্ডালে ৫০,৪০% পাণ্ডবেশ্বরে ৫২% ও দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লক এ ভোট পড়েছে ৫২%।
এদিন ভোটদান পর্ব শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকেই কেন্দ্র বাহিনীর অনুপস্থিতি ও বুথে বিরোধী এজেন্টদের বসতে না দেওয়া নিয়ে বিরোধীরা অভিযোগ করতে শুরু করে। অভিযোগ হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও বেশিরভাগ বুথেই এদিন দেখা যায়নি কেন্দ্রীয় বাহিনী জাওয়ানদের। রাজ্য পুলিশ ও সিভিক ভলেন্টিয়ার্সদের দিয়ে ভোট করানো হয়েছে।
সকাল ন’টা নাগাদ বিজেপি অভিযোগ করে পাণ্ডবেশ্বর ব্লকের হরিপুরের ৩২ নম্বর বুথে বিজেপি প্রার্থী ভি,কি চৌরাশিয়া ও তার বাবাকে মারধর করা হয়। অভিযোগ ওঠে তৃণমূল প্রার্থী গোপীনাথ নাগের বিরুদ্ধে। গোপীনাথবাবু তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেন । সিপিএমের অভিযোগ বেলা একটার পর ওই বুথে সিপিএমের এজেন্ট লক্ষীরাম মুর্মুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ভোটকে কেন্দ্র করে অন্ডাল পঞ্চায়েতের শকরা এলাকায় তৃণমূল ও সিপিএম কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এদিন ভোট শুরুর কিছুক্ষণ আগে অন্ডালের রামপ্রসাদপুরের নেতাজি বিদ্যাপীঠ ১৪২ নম্বর বুথে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে জখম হন এক কর্মী। ওই বুথের প্রিসাইডিং অফিসার জানান রাতভর বুথে বিদ্যুৎ ছিল না। সকালে বিদ্যুৎ মেরামতির কাজ করার সময় এক কর্মী বিদ্যুৎপৃষ্ট হন । গরমের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই বুথে দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ কর্মীও।
সিপিএম নেতা তুফান মন্ডল জানান তিনটি ব্লকের বেশিরভাগ বুথেই বিরোধীদের এজেন্ট বসতে দেয়নি শাসক দল যেসব বুথে সকালে এজেন্ট বসতে পেরেছিল বেলা ন’টার পর তাদেরও মারধর করে বুথ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের মদতে শাসক দল নজিরবিহীন ভাবে ভোট লুট করেছে বলে অভিযোগ করেন তুফান বাবু। বিজেপির জেলা নেতা শ্রীদীপ চক্রবর্তী জানান হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও বেশিরভাগ বুথেই ছিল না কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাহিনীকে অকেজো করে রেখে শাসক দল সর্বত্র ভোট লুঠ করেছে। খনি অঞ্চলের মানুষ ভোটের নামে প্রহসন দেখল বলে অভিযোগ করেন শ্রীদীপ বাবু। বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী জানান অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে এদিন। বিরোধীরা বুথে এজেন্ট দিতে না পারলে তার দায় তৃণমূলের নয় পরাজয় নিশ্চিত জেনেই বিরোধীরা অবান্তর অভিযোগ করছে বলে জানান নরেন্দ্রনাথ বাবু।