আর দেখ যাবে না দুর্গাপুরে ডিপিএলের কোকওভেন প্ল্যান্টের গ্যাসহোল্ডার
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ২৪ জানুয়ারীঃ
প্রতিদিনের মতোই আগামীকালও সকাল দেখবে শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরের বাসিন্দারা। কিন্তু দেখতে পাবে না ডিপিএলের কোকওভেন প্ল্যান্টের গ্যাসহোল্ডারটি, যেটি কিনা দুর্গাপুরের একটি অন্যতম নিদর্শন।
১৯৬১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের হাত ধরে তৈরী হয়েছিল ডিপিএল। ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল বোর্ডের সময়েই ৫৮ টি কোক ওভেনের ১ এবং ২ নং ব্যাটারি গড়ে উঠে।তারপরে ১৯৬৩ সালে গড়ে ওঠে ৩ এবং ৪ নং ব্যাটারি। তারপরে গড়ে ওঠে ৫ নং ব্যাটারি। নিজেদের স্পান পাইপের ফ্যাক্টরিও ছিল বর্ধমানে প্রায় ৫ একর জমির ওপর।নিজস্ব ওয়াটার ট্রিটমেন্ট ওয়ার্কসও আছে দুর্গাপুরে।বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ১৯৬০ সালে গড়ে ওঠে ১ নং ইউনিট।সেই বছরেরই ১৩ ই জুন চালু হয় ২য় ইউনিট।দুটি ইউনিট এরই বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা ছিল ৩০ মেগাওয়াট করে। তারপর ১৯৬৪ সালের ২৩ শে এপ্রিল,১৯ শে জুন,৪ ঠা মে ৭৫ মেগাওয়াট করে উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ৩,৪,৫ নং ইউনিট শুরু হয়। কোকওভেন প্ল্যান্টে কয়লা থেকে ল্যাম কোক, হার্ড কোক, কোল গ্যাস উৎপন্ন হত। ২০১৫ সালের জুন মাসে বন্ধ হয়ে যায় প্ল্যান্টটি। ডিপিএলের উদ্বৃত্ত জমি বিক্রি করে আয় করে রুগ্ন ডিপিএলকে বাঁচানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই অনুযায়ী প্রায় দু’শো একর জায়গা জুড়ে থাকা কোকওভেন প্ল্যান্টে কাটিং শুরু হয় গত আগস্টে।
২নং জাতীয় সড়ক ধরে দুর্গাপুরের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় সবার আগে চোখে পড়ত ডিপিএলের এই গ্যাসহোল্ডারটি যা আগামীকাল থেকে আর কখনোই দেখা যাবে না। স্বভাবতই মন খারাপ শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দাদের, বিশেষ করে ডিপিএলের প্রবীন কর্মীদের। সোমবার ডিপিএলের এর কোকওভেন প্ল্যান্টের গ্যাসহোল্ডারকে ভূপতিত করার মধ্যে দিয়ে বিসর্জন হলো ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়ের স্বপ্নের।