ভয়ানক মৃত্যু, ডি.এস.পিতে টুকরো টুকরো হয়ে গেল শ্রমিকের দেহ
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ২ ডিসেম্বরঃ
এ যেন মৃত্যুপুরী যেখানে চলেছে মৃত্যু মিছিল। এক দিকে যেমন বাড়ছে কারখানার উৎপাদন থেকে শুরু করে মুনাফার হার তেমনি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শ্রমিকের মৃত্যুর হার। সে ঠিকা শ্রমিকই হোক কিংবা স্থায়ী শ্রমিক। মৃত্যুর হাতছানি থেকে বাদ পড়ছে না কেউই। আর এই মৃত্যুপুরী হল দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা৷ হ্যাঁ এই কারখানাতেই দিন কয়েকের মধ্যে মৃত্যু হল বেশ কয়েকজন শ্রমিকের। গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার একজন ঠিকা শ্রমিক আবার এই কারখানাতে কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আগুনে ঝলসে একটি হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। সেই ঘটনার রেশ কাটার আগেই বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে ভয়ানকভাবে মৃত্যু হল এক স্থায়ী শ্রমিকের। এই কারখানার র’ মেটেরিয়াল হ্যান্ডেলিং প্ল্যান্ট(RMHP) এর ওল্ড সাইট অপারেশন বিভাগের কর্মী আশুতোষ ঘোষালের(৫৪) মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। কারখানা সুত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল নাইট সিফটে কাজ করার সময় আশুতোষবাবু কোনোভাবে চলন্ত কনভেয়ার বেল্টের উপর পড়ে যান৷ টুকরো টুকরো হয়ে যায় তাঁর দেহ। দুর্ঘটনার প্রায় দু’ঘন্টা পর তাঁর খন্ড খন্ড দেহ উদ্ধার হয়। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জানা গিয়েছে, বি-জোনের ২বি/৫০ বঙ্কিম চন্দ্র অ্যাভিন্যুয়ের বাসিন্দা ছিলেন তিনি । পরিবারে স্ত্রী ও এক ছেলে আছেন। দিন কয়েক পরে আশুতোষবাবুর ছেলের বিয়ে ছিল। তার আগেই এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে আশুতোষবাবুর পরিবার সহ শ্রমিক মহলে।
পাশাপাশি এই ঘটনায় মারাত্মক ক্ষোভের সঞ্চার হয় শ্রমিক মহলে। রাতে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা কর্মীরা ঘটনার প্রতিবাদ জানান। বারবার বারবার একই ঘটনা ঘটেই চলেছে এই কারখানায়। কর্তৃপক্ষের তরফে কখনও কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হচ্ছে তো কখনো আধিকারিকদের সাসপেন্ড করা হচ্ছে। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কি কিছু হচ্ছে। আটকানো সম্ভব হচ্ছে কি শ্রমিক মৃত্যু? এমনটাই সব প্রশ্ন তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে শ্রমিক মহল।
প্রসঙ্গতঃ গত মাসে অর্থাৎ ২০ নভেম্বর এই কারখানারই ব্লাস্ট ফার্নেসে ল্যাডেল থেকে গলিত লোহা ছলকে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। সেই দুর্ঘটনায় পুড়ে মৃত্যু হয় তিনজন শ্রমিকের। আহত একজন এখনো হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে৷ এই ঘটনার ১১ দিনের মাথায় আবারো একজন শ্রমিকের এরকম ভয়ানক মৃত্যুতে একদিকে যেমন ক্ষোভে ফুঁসছেন শ্রমিকরা তেমনই আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে শ্রমিক সহ তাদের পরিবারের মনে।