প্রশাসনিক উদ্যোগে শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরে কবিগুরুকে শ্রদ্ধার্ঘ্য
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান, ৮মেঃ
করোনার আক্রমনে এ বছর সব কিছুই যেন ওলট পালট হয়ে গেছে। বিশেষতঃ বাঙ্গালীর বহু উৎসব যার জন্য সারা বছর তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকে, কিন্তু এ বছর করোনার প্রকোপ সে সব কিছুর থেকে আপামোর বাঙ্গালীকে বঞ্চিত করছে। যেমন আজ অর্থাৎ শুক্রবার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৯তম জন্মদিবস। কিন্তু লকডাউনের কারনে রাজ্যবাসী গৃহবন্দী দশা কাটাচ্ছে। তাই কবিগুরুর জন্মদিনে তাঁকে প্রতিবছর বাঙ্গালী যেভাবে শ্রদ্ধা জানায় সেক্ষেত্রে এ বছর তার ব্যাক্তিক্রম ঘটল। কিন্তু তা বলে কি কবিগুরুকে তাঁর জন্মদিবসে কোনো শ্রদ্ধাই জানানো হবে না? সেই কথা ভেবেই প্রশাসনিক স্তরে বিভিন্ন জায়গায় সকাল থেকেই দেখা গেল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে স্মরন করতে। ব্যাতিক্রম নয় শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরও। এখানে মহকুমা প্রশাসন থেকে শুরু করে পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিক থেকে শুরু করে কর্মীদের দেখা গেল কবিগুরুকে শ্রদ্ধা জানাতে।
সকাল ৯টায় দুর্গাপুর তথ্য ও সংকৃতি দপ্তরের উদ্যোগে করবিগুরুকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানানো হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন দুর্গাপুর মহকুমা শাসক অনির্বাণ কোলে ও দুর্গাপুর মহকুমা তথ্য ও সংকৃত আধিকারিক নরেন্দ্রনাথ দত্ত।
অপরদিকে, এদিন আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেরটের অন্তর্গত দুর্গাপুর পুলিশের উদ্যোগেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালন করা হল। এদিন দুর্গাপুরের বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়ির আধিকারিক ও পুলিশ কর্মী সহ সিভিক ভলান্টিয়াররা কবিগুরুকে মাল্যদান ও পুষ্পার্ঘ্যের মধ্যে দিয়ে কবিপ্রনাম জানালেন। এছাড়াও এদিন শহরবাসীর জন্যই মূলতঃ ২৫শে বৈশাখ উপলক্ষ্যে তিনটি ট্যাবলো বের করা হয়, যার মধ্যে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক রাজশেখর মুখোপাধ্যায় ও দুর্গাপুর ট্রাফিকের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক মনোরঞ্জন মন্ডলের নেতৃত্ব দুটি ট্যাবলো বের করা হয়। এছাড়া অপর একটি বের করা হয় হয় কাঁকসা, কোকওভেন ও নিউটাউনশিপ থানার যৌথ উদ্যোগে। এদিন প্রথমে ডিসিপি(পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা পতাকা উত্তোলন করে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন। সাথে ছিলেন এসিপি(পূর্ব) স্বপন দত্ত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুটি গান গাওয়ার পর ট্যাবলো নিয়ে শহর পরিক্রমায় বের হয়।
এদিন ট্যাবলো দুটি বেরিয়ে দুর্গাপুরের শ্রীনগরপল্লী, চতুরঙ্গ ময়দান, বেনাচিতির বিভিন্ন এলাকা পরিক্রম করে পুনরায় থানায় ফিরে আসে।
অপরদিকে অন্য ট্যাবলো যেটি কাঁকসা, কোকওভেন ও নিউটাউনশিপ থানার পক্ষ থেকে বের করা হয়, সেই ট্যাবলোটি প্রথমে নিউটাউনশিপ থানা থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন এলাকা পরিক্রমা করে পৌঁছয় কোকওভেন থানায়। সেখানেও বিভিন্ন এলাকা পরিক্রমা করে শেষ যায় কাঁকসা থানা এলাকায়। এই ট্যাবলো থেকেও একদিকে যেমন গানের মাধ্যমে রবি ঠাকুরকে শ্রদ্ধা জানানো হয়, তেমনই পাশাপাশি করোনা ভাইরাস নিয়েও সচেতন করা হয় সাধারন মানুষজনকে। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এসিপি(কাঁকসা) শ্বাশ্বতী শ্বেতা সামন্ত সহ থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকগণ।
ডিসিপি(পূর্ব) অভিশেক গুপ্তা জানান “এদিন ট্যাবলো বের করার মূল উদ্দ্যেশ্য হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি করোনা ভাইরাস নিয়ে সাধারন মানুষকে সচেতন করা হয় আর সাথে পথ চলতি মানুষদের মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরন করা হয়।”