লকডাউনে ডিউটি করতে বিহারে গিয়ে চরম হেনস্থার শিকার দুই সরকারী বাস চালককে সম্বর্ধনা দুর্গাপুর প্রশাসনের তরফে
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান, ১২মেঃ
এই রাজ্য থেকে ভিন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে গিয়ে চরম হেনস্থার শিকার হলেন রাজ্যের দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার দুই বাস চালক। পরে রাজ্য প্রশাসনের উদ্যোগে ওই দুই বাস চালক নিরাপদে ফিরে আসেন নিজের ঘরে। আজ ওই দুই বাস চালককে দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসনের তরফে তাদের সাহসিকতা ও কর্তব্যবপরায়নতার জন্য সম্বর্ধনা দেওয়া হয়।
তৃতীয় দফার লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন রাজ্যে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজের নিজের রাজ্যে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের সরকারের পক্ষ থেকে। ভিন রাজ্যে আটকে থাকা শ্রমিকরাও যেমন বাস বা ট্রেনের মাধ্যমে এই রাজ্যে ফিরছেন তেমনই এই রাজ্য থেকেও ভিন রাজ্যে শ্রমিকদের ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। সেরকমই দুর্গাপুর ও বর্ধমান শহর থেকে শনিবার আটটি বাসে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে বিহারের জামুই জেলায় যায়। কিন্তু অভিযোগ, বিহার প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই শ্রমিকদের বাস থেকে নামতে বাধা দেওয়া হয়, সাথে তাদের বাংকায় ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনকি বাসের চালকদের মারধরো করা হয় বলে অভিযোগ। পরে শ্রমিকদের নামিয়ে ছ’টি বাস রাজ্যে ফিরতে পারলেও দুটি বাস যার চালক গোপাল মাঝি ও মোল্লা ওয়াহিদ হককে নির্দেশ দেওয়া হয় যে তাদের বাসে যে কয়েকজন উত্তরপ্রদেশের পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছে তাদের যেন উত্তরপ্রদেশেই পৌঁছে দেওয়া হয়।
এদিকে বিষয়টি জানতে পেরে দুর্গাপুর প্রশাসনের পক্ষ থেকে জামুই থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের সাথে যোগাযোগ করে তাঁকে সহযোগিতা করার আবেদন জানানো হলে তাঁর পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। এরপর রবিবার দুর্গাপুর থেকে প্রসাসনিক কর্তারা গাড়ি নিয়ে ওই দুই বাস চালকের সন্ধানে বিহারের উদ্দ্যেশ্যে রওনা দেন। সেখানে জিপিএসের মাধ্যমে তাদের হাজারীবাগে সন্ধান পাওয়া যায়। তাদের উদ্ধার করে নিরাপদে দুর্গাপুরে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন প্রশাসনিক কর্তারা। ওই দুই বাসের চালক জানান্ন তাঁরা শ্রমিকদের পৌঁছতে গিয়ে চরম হেনস্থার শিকার হন।
আজ মঙ্গলবার ওই দুই বাসের চালকের কর্তব্যপরায়নতাকে উৎসাহিত করতে সাথে ভবিষ্যতে তাঁরা এভাবেই নিজেদের কর্তব্যে সাহসিকতার সাথে অবিচল থাকেন তার জন্য দুর্গাপুর মহকুমা শাসকের দপ্তরে তাদের ফুল ও মিষ্টি দিয়ে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। সাথে তাদের হাতে ৮,৮৮৩ টাকা ও ৯,,১৩৩ টাকা চেক তুলে দেন মহকুমা শাসক অনির্বাণ কোলে।