টাকার বিনিময়ে ডিপিএলের আবাসন বিক্রির অভিযোগ শাসক ঘনিষ্ঠের বিরুদ্ধে
আমার কথা, দুর্গাপুর, ১২ মেঃ
বেআইনিভাবে টাকার বিনিময়ে সরকারী আবাসনে লোক বসানোর অভিযোগ উঠল খোদ শাসকদলের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে। বিষয়টি চাউড় হতেই বেশ সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করেছে শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরের বুকে। এদিকে দখলদারদের উচ্ছেদের নোটিশ ধরানো হয়েছে কর্তৃপক্ষের তরফে। স্বভাবতই এখন ঘর হারানোর চিন্তায় পড়েছেন বসবাসকারীরা।
জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের সংস্থা ডিপিএলে টাউনশিপের কিছু খালি আবাসনে টাকার বিনিময়ে শহরের কিছু পরিবারকে ঢুকিয়ে দেয় স্থানীয় তিন প্রভাবশালী ব্যাক্তি বলে অভিযোগ। কারুর থেকে ৩০ হাজার তো কারুর থেকে ৪০ আবার কারুর থেকে ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে এই আবাসনের বিনিময়ে। ডিপিএল সমবায় সমিতির সামনে সি(C) ও ই(E) টাইপ কিছু আবাসন শহরের কিছু মানুষের কাছে কার্যত বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে ওই তিন কর্মীর বিরুদ্ধে। তাঁরা সেখানে বসবাস করতে শুরু করেন সাথে বিনামূল্যে জল ও বিদ্যুতও ব্যবহার করতে থাকে ওই পরিবারগুলি। এদিকে জানা যাচ্ছে ওই পরিবারগুলির সাথে দুরদুরান্তে ডিপিএলের কোনো সম্পর্কও নেই, ফলে ওই আবাসনে বসবাস করার কোনো অধিকারও তাদের নেই। যদিও এ বিষয়ে পুরোপুরি অন্ধকারে ওই পরিবারগুলি। ওই প্রভাবশালীদের কথার ফাঁদে পা দিয়ে এখন বিপাকে পড়েছে পরিবারগুলি।কারন ইতিমধ্যেই ডিপিএল থেকে তাদের তিনদিনের মধ্যে আবাসন খালি করে দেওয়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে ওই পরিবারগুলি। এদিকে যারা টাকার বিনিময়ে ওই আবাসনে পরিবারগুলিকে বসিয়েছে তাঁরা হয় ফোন ধরছে না আর ধরলেও দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন। এই ঘটনায় যাদের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল উঠছে তাদের মধ্যে একজন লক্ষণ লামা সক্রিয় তৃণমূল কর্মী বলে স্বীকার করে নিয়েছে প্রাক্তন তৃণমূল পুরপিতা সুভাষ মজুমদার। লক্ষণ লামা তৃণমূলের বিভিন্ন মিটিং মিছিলেও থাকেন বলে মেনে নিয়েছেন সুভাষবাবু। যদিও সুভাষবাবু এই তৃণমূল কর্মীকে বাঁচাতে সমস্ত দায় ডিপিএল কর্তৃপক্ষের উপরেই চাপিয়ে দিয়েছেন।
এদিকে ডিপিএলের জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র বলেন, কে কাকে টাকা দিয়ে ডিপিএলের আবাসনে ঢুকেছে তার দায় ডিপিএলের নয়। অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান চলবে বলেও জানান তিনি।
যে বা যিনি এই অবৈধ কারবারে জড়িত, দল অন্যায়ের সাথে আপোষ করবে না পাল্টা প্রতিক্রিয়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের। শাসক দলকে পাল্টা তুলোধোনা করেছেন বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই ও জেলা সিপিএমের সম্পাদক মন্ডলী সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার। সব মিলিয়ে দুর্গাপুর পুরভোটের আগে সরকারি সংস্থার আবাসন কেনা বেচার অবৈধ লেনদেনের ঘটনার অভিযোগে অস্বস্তি ও বিড়ম্বনা দুই বেড়েছে শাসক শিবিরে। তৃণমূলের “নবজোয়ার” কর্মসূচিতে আগামী পনেরো তারিখ পশ্চিম বর্ধমানে আসছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, আর তার আগে এমন অভিযোগের ঘটনায় তোলপাড় জেলার রাজনীতি।