দুর্গাপুরে সরকারী স্কুলে রাজনৈতিক অনুষ্ঠান, বিতর্ক
আমার কথা, দুর্গাপুর, ২৯ মে:
বিকেলের দিকে ঝড় বৃষ্টিতে শরীর-মন ঠান্ডা হলেও দিনে দুপুরে রোদের তাপে ঝলসে যাচ্ছে নাগরিক জীবন। এই দাবদাহে যদি পান্তা ভাত বাঙ্গালীর পাতে পড়ে , তাহলে তো আর কথাই নেই ! পেটও ঠান্ডা , মনও ঠান্ডা ! সোমবার ১৫ নং ওয়ার্ড তৃণমূল কতৃক এমনই এক পান্তা পরবের আয়োজন হয়েছিল বেনাচিতির সরকারী বিদ্যালয়ে। কিন্তু দুদন্ড শান্তিতে ঠান্ডা পান্তা আর পোস্তর বড়ায় যে জীবন জুড়াবে , তার উপায় নেই ! সেখানেও কালবৈশাখীর স্পিডে ধেয়ে এল বিতর্ক ! কেন সরকারী স্কুলে তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে পান্তা উৎসব ?
বিজেপির লক্ষ্মন ঘোড়ুই বলছেন , এত এত টাকা মেরেছে তৃণমূল , সেই টাকায় হোটেল ভাড়া করে করুক , স্কুল কেন ? শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা করেছে রাজ্য সরকার , তাই স্কুলে এধরনের উৎসবের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক। সিপিআইএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকার বলছেন গরমের ছুটিতে স্কুল বন্ধ, মিড ডে মিল বন্ধ , একশ্রেণীর মানুষ খেতে পাচ্ছে না ,আর তৃণমূল পান্তা খাইয়ে ফুর্তি করছে।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অসীমা চক্রবর্তীর যুক্তি, তৃণমূলের অত টাকা নেই হোটেল ভাড়া করার। এখন গরমের ছুটি চলছে, স্কুল বন্ধ,স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি নিয়েই এই উৎসব আয়োজন করা হয়েছে ,জানাচ্ছেন তিনি।
২০/- টাকার বিনিময়ে এদিনের পান্তা ভাতের আয়োজন ছিল বিপুল। পান্তা ভাতের সাথে গন্ধরাজ লেবু ,পেঁয়াজ ,কাঁচালঙ্কা ,পোস্তর বড়া,পেঁয়াজি, আলু ভাজা, কাতলা মাছের কালিয়া ,চাটনি, পাপড় ,শেষে মিষ্টি। গোটা স্কুল প্রাঙ্গন তৃণমূলের পতাকা ও নেতা-নেত্রীদের কাট আউট দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছিল। পান্তা উৎসবে এসে কব্জি ডুবিয়ে খেলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, সঙ্গে ছিলেন দীপঙ্কর লাহা ,রমাপ্রসাদ হালদার, মধুসূদন মন্ডল সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী কটাক্ষ করে বললেন যে বিরোধীরা ঠান্ডা ঘরে বসে ব্লগ করুক আর কমেন্টস করুন, আমরা মানুষের সাথে আছি ,তাই জমিয়ে পান্তা খেলাম।
তবে সোমবারের দ্বিপ্রাহরিক বিতর্ক শহরের রাজনৈতিক আবহাওয়াকে যেভাবে গরম করলো, তাতে নিরীহ পান্তা কতটা ঠান্ডার প্রলেপ দেবে , সেটা সময়ই বলবে।