পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার পরিকল্পনায় আসানসোলে প্রশাসনিক সভা
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান, ১৭জুনঃ
রাজ্যের মধ্যে প্রথম। পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে লক ডাউনে কাজ হারিয়ে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের নতুন করে কাজের ব্যবস্থা হতে চলেছে। এই ব্যাপারে পরিকল্পনা গ্রহন করতে আজ বুধবার আসানসোলের রবীন্দ্র ভবনে জেলা প্রশাসনের তরফে এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। সেই কর্মশালাতেই এদিন বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও শিল্প প্রতিষ্ঠান শ্রমিক দের কাজে নেওয়ার জন্য নিয়োগ পত্র তুলে দেয়। এই কর্মশালায় অতিথি হিসেবে ছিলেন রাজ্যের সিএমআরওর চেয়ারম্যান কর্ণেল দীপ্তাংশু চৌধুরী আসানসোল পুরনিগমের মেয়র তথা পান্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তেওয়ারি, আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের কমিশনার সুকেশ জৈন ও আসানসোল দূর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার চেয়ারম্যান বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায়। এদিনের কর্মশালার নেতৃত্বে ছিলেন পশ্চিম বর্ধমান জেলাশাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাজি। কর্মশালায় মেয়র বলেন, পরিযায়ী শ্রমিক দের এইভাবে নতুন করে কাজের ব্যবস্থা করায় পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। জেলাশাসক ও পুলিশ কমিশনার নতুন একটা রাস্তা গোটা রাজ্যকে দেখিয়েছেন৷ তারা বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করে একটা মেলবন্ধন তৈরী করেছেন৷ যাদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের সঙ্গে প্রথমে কাজের ও পরে ভালো সম্পর্ক তৈরী হবে৷ আজ এমন সময়ে তাদের কাজ দেওয়া হচ্ছে , যখন তাদের কাছে কোন উপায় নেই। এই লোকেরা আপনাদের ভগবানের আসনে বসাবেন। প্রশাসনের আগ্রহে ব্যবসায়িক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে আসার এই পদক্ষেপ গোটা রাজ্যে এই জেলার একটা আলাদা পরিচিত এলো। তিনি আরো বলেন, করোনার কারণে সমাজের সম্পন্ন মানুষদের সাধারণ মানুষের সেবা করার ভালো সুযোগ এনে দিয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের জন্য করা সেবা, তাদের প্রতি নজর বদলাবে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হুয়ের প্রথম নির্দেশ পাওয়ার পর থেকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় নিজে প্রাণের বাজি রেখে, একজন মায়ের মতো বাংলার মানুষদের রক্ষার জন্য কাজ করে চলেছেন৷ তাকে দেখে আরো অনেকেই এগিয়ে এসেছেন৷ সিএমআরওর চেয়ারম্যান কর্ণেল দীপ্তাংশু চৌধুরী বলেন, পরিযায়ী শ্রমিকরা অনেক কাজ করতে দক্ষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় সব জেলার জেলাশাসকদের পরিযায়ী শ্রমিক দের জন্য ডাটা ব্যাঙ্ক তৈরীর নির্দেশ দিয়েছেন৷ যেজন্য এদিন আসানসোলে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা এগিয়ে আসায় এই পরিযায়ী শ্রমিকরা কাজ পাবেন৷ এটা সবে শুরু। এটা চলতেই থাকবে৷ তিনি আরো বলেন, আজ পুরো দেশে যেভাবে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে, তাতে কেন্দ্র সরকার সঠিক ভাবে পরিকল্পনা নিয়ে লক ডাউন করলে, এই চেহারা হয়তো হতোনা। যখন করোনার প্রকোপ কম ছিলো, সেই সময় অন্য রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিক দের রাজ্যে ফেরানো উচিত ছিলো৷ যখন ভালোভাবে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লো, তখন পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হলো। কেন্দ্র সরকার প্রতিদিনই আইন ও নির্দেশে বদল আনছে৷ যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে উপেক্ষা করেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা না বলে কেন্দ্র সরকার যা খুশি করছে৷ যেকারণেই গোটা দেশের এই পরিস্থিতি আজ সবার সামনে। বাংলাকে নিয়ে সবাই কথা বলে্ছে। অথচ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় নিজে লক ডাউনের শুরু থেকেই সাধারণ মানুষদের বাঁচানোর জন্য রাস্তায় নেমে কাজ করছেন। জেলায় জেলায় জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার থেকে সবাই রাস্তায় নেমে কাজ করছেন৷