ঘাটে দাঁড়িয়ে সার সার ট্রাক, অন্ডালে অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে বালি
আমার কথা, বিশেষ প্রতিবেদন, অন্ডাল, ২ মার্চঃ সরকারি অনুমতি ছাড়াই অন্ডাল এর দামোদর নদীর মদনপুর ও নুপুর ঘাট থেকে অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে বালি । ট্রাক্টর ও ট্রাকে করে সেই বালি পাচার করা হচ্ছে জেলা ও জেলার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় । পাচার বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেন অতিরিক্ত জেলা শাসক ।
অবৈধ কয়লা, বালি, গরু পাচার কান্ড নিয়ে রাজ্যে তদন্ত চালাচ্ছে একাধিক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা । ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, শাসকদলের নেতা রয়েছেন জেল হেফাজতে । কিন্তু অবৈধ পাচার কারবার এখনও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি । অন্ডালে দামোদর নদী থেকে চলছে বালি পাচার বলে অভিযোগ বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলির । অন্ডালের দামোদর নদীর মদনপুর ও নুপুর ঘাট থেকে অবৈধভাবে বালি তুলে তা পাচার করা হচ্ছে, এই ঘটনা প্রমাণ করে বিরোধীদের অভিযোগের সত্যতা । খোঁজ নিয়ে জানা যায় অন্ডালের মদনপুর ও সংলগ্ন নুপুর এলাকায় নদীঘাট থেকে অবাধে চলছে বালি তোলা ও পাচারের কাজ । খবরের সত্যতা জানার জন্য নদী ঘাটে গিয়ে দেখা যায় সারি সারি দাঁড়িয়ে ট্রাক্টর ও ট্রাক । জেসিপি মেশিন ও পাম্পের সাহায্যে নদী থেকে তোলা হচ্ছে বালি । নদী থেকে তুলে ঘাটের পাড়ে সেই বালি মজুত করা হচ্ছে । প্রতিদিন রাতের বেলা থেকে সকাল আটটা, ন’টা পর্যন্ত এইভাবে বালি তুলে মজুদ করার কাজ চলে । বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার পর মজুত করা বালি পাচার করা হচ্ছে ট্রাক ও ট্রাক্টরে লোড করে । নদী ঘাট থেকে বালি বোঝাই গাড়িগুলি টপ লাইন হয়ে জাতীয় সড়ক ধরে চলে যায় বর্ধমান, কলকাতা সহ জেলা ও জেলার বাইরে বিভিন্ন গন্তব্যে । স্থানীয় বালি মাফিয়ারা সংগঠিত ভাবে অবৈধ পাচারের কাজ চালাচ্ছে বলে এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ ।
বিষয়টি নিয়ে দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, এটা নতুন কিছু নয়। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে বালি, লোহা, কয়লা, গরু পাচার প্রতিদিনের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাছ যেমন জল ছাড়া বাঁচতে পারে না, তেমনই তৃণমূল বালি লোহা, কয়লা ছাড়া বাঁচতে পারবে না। ট্রাক পিছু ২০ হাজার টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। আমি পুলিশকে জানিয়েছি, কিন্তু তারপরেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কারন এসবের ভাগ যাচ্ছে কালীঘাটে, যাচ্ছে ভাওপোর কাছে। তাই এসব চলবে কারোর কিছু করার নেই। সিপিএম নেতা তুফান মন্ডল বলেন স্থানীয় বালি কারবারিরা কিছুদিন চুপ থাকার পর ফের পাচারের কাজে সক্রিয় হয়ে উঠেছে । প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে নীরব! তাই প্রশাসনের ভূমিকাও সন্দেহজনক বলে জানান তুফান বাবু । বিজেপি দলের রাণীগঞ্জ বিধানসভার কনভেনার জয়ন্ত মিশ্র বলেন অবৈধ বালি পাচার বন্ধ করার দাবিতে দলের পক্ষ থেকে আমরা অনেকবার পুলিশ ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ডেপুটেশন দিয়েছি । কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি । অভিযোগের বিষয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর) অরণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন বিষয়টি স্থানীয় ব্লক (অন্ডাল) ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরকে বলছি যে ঘাট গুলি থেকে বালি পাচারের অভিযোগ আসছে সেই জায়গাগুলিতে তল্লাশি চালিয়ে ব্যবস্থা নিতে।