দিদির নির্দেশই সার, দুর্গাপুরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে তৃণমূল রইল তৃণমূলেই
আমার কথা, দুর্গাপুর, ৩ মার্চ:
খোদ দলের সুপ্রিমোও বোধহয় ব্যর্থ দলের গোষ্ঠীকোন্দল আটকাতে। দুর্গাপুরে গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে একের পর আসন হাত ছাড়া হয়ে যাচ্ছে শাসকদলের, তার পরেও যে শিল্পাঞ্চলের দলীয় নেতৃত্বের হুঁশ ফিরছে না। দিন কয়েক হয়েছে দুর্গাপুরে শীর্ষ নেতৃত্বদের ডেকে এক সাথে বসিয়ে “এক সাথে চলার”-র নির্দেশ দিয়ে গেছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। অথচ এক সপ্তাহও যায়নি ফের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে মেতে গেল শাসক দল। আর এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়লেন জেলার প্রাক্তন আইএনটিটিউসি নেতা বিশ্বনাথ পাড়িয়াল।
গত লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রটি হাতছাড়া করেছে শাসকদল। সৌজন্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এরপর বিধানসভা নির্বাচনে দুর্গাপুর পশ্চিমও হাতছাড়া হল ঘাস-ফুল শিবিরের। সৌজন্যে সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। হারানো আসন পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্য নিয়ে নতুনভাবে চিন্তাভাবনা করে দলনেত্রী সিদ্ধান্ত নিয়ে দুর্গাপুর পশ্চিমের দায়িত্বভার তুলে দিলেন লড়াকু নেতা বিশুর হাতে৷ দায়িত্ব কাধে নিয়ে ময়দানে ঝাঁপালেন বিশ্বনাথ। অথচ সেই বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে দলীয় নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিতে শোনা গেল। বিস্ফোরক মন্তব্য শোনা গেল প্রাক্তন শ্রমিক নেতার মুখে। নাম না করে বর্তমান শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তিনি বলেন “আমি কোনো দাদা ভাইয়ের দল করি না। আমি দিদির দল করি”। আর তাঁর এই মন্তব্যে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক শিবির।
ঘটনার সুত্রপাত, শনিবার। আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক আইএনটিটিইউসির প্রাক্তন জেলা সভাপতির এলাকায় অবস্থিত দুটি কারখানার শ্রমিক ও কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে যান। অথচ তাকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হল না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিশ্বনাথ। দলের সুপ্রিমোর নির্দেশকে তোয়াক্কা না করে এহেন কাজের জন্য আখেরে দলেরই ক্ষতি করছেন এনারা, এই অভিযোগ তুলে বিশ্বনাথ পাড়িয়াল বলেন নগ্ন দলবাজি করা হচ্ছে, আর লোকসভা নির্বাচনের আগে দলে থেকে দলের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে। এরকম চললে লোকসভা ভোটে দলের হার নিশ্চিত বলেও দাবি করেন বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। এ বিষয়ে তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকেও জানিয়েছেন।
যদিও, বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের আনা অভিযোগ মানতে নারাজ আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক অস্বস্তি এড়াতে বলেন, নেত্রীর নির্দেশে আমরা সবাই এক সাথেই চলবো। শ্রমিক স্বার্থে কথা বলতে এসেছিলাম, এতে কোনো ভুল নেই।
এদিকে, তৃণমূলের এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই বলেন, দলের কেউ দলনেত্রীকে মানেন না। দলের উপর যে নেত্রীর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, এই ঘটনাটা আবার সেটা প্রমান করলো।