নিরাপত্তাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ফের দুর্ঘটনা ডিএসপিতে, ঝলসে গেলেন ৩ ঠিকা কর্মী
আমার কথা, দুর্গাপুর, ১৫ মার্চঃ
দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় বেসিক অক্সিজেন ফার্নেস বিভাগের দুর্ঘটনার রেশ এখনো কাটেনি, তার মধ্যেই ফের দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটল ওই কারখানায়। এবার ব্লাস্ট ফার্নেস বিভাগে প্লেট কাটিংয়ের সময় আগুনে ঝলসে গেলেন তিনজন ঠিকা শ্রমিক। এদের মধ্যে একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনজনের নাম হল বিনোদ কুমার চালাহ, রাজেশ গুপ্তা ও হীরালাল গোপ। এরা তিনজনেই পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খন্ডের বাসিন্দা। কারখানা সুত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ২০ নাগাদ ব্লাস্ট ফার্নেসে গ্যাস কাটার দিয়ে প্লেট কাটার সময় আচমকাই ‘ব্যাক-ফায়ার’ হয়। তিনজনের মধ্যে বিনোদের মুখ ও ডান হাত পুড়ে যায়। রাজেশ ও হীরালালের মুখ আর দুই হাত আগুনে ঝলসে যায়। এদেরকে তড়িঘড়ি প্ল্যান্ট মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। এদের মধ্যে রাজেশ গুপ্তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে বিধাননগরে একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গতঃ গত ২৯ ফেব্রুয়ারী বেসিক অক্সিজেন ফার্নেসে গলিত লাভায় ঝলসে যান এক আধিকারিক সহ পাঁচজন কর্মী। এদের মধ্যে দুজন ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিসের মৃত্যু হয়েছে। তিনজন পাঞ্জা লড়ছেন হাসপাতালের। তারই মাঝে আবার মিশ্র ইস্পাত কারখার এসএমএস বিভাগে ঝলসের মৃত্যু হয়েছে ঋষিরাজ দাস নামে এক স্থায়ী কর্মী। পর পর ঘটতে থাকা দুর্ঘটনাগুলিতে শ্রমিক মহলে যখন পারদ চড়ছে তখন এদিনের এই দুর্ঘটনা ঘৃতাহুতি দিলো মনে করছে শ্রমিক সংগঠনগুলি।
হিন্দুস্থান স্টিল ইউনিয়ন এমপ্লয়িজ(সিটু অনুমোদিত) এর সভাপতি বিশ্বরূপ বন্দোপাধ্যায় বলে, কারখানার যন্ত্রাংশগুলি বহু পুরোনো হয়ে গেছে। কারখানার আধুনিকীকরণের দিকে কোনো নজর নেই। কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিক নিরাপত্তার বিষয়ে উদাসিন। শ্রমিক স্বার্থে সংগঠনগুলির সুস্থ আলোচনায় না গিয়ে ইগো ধরে বসে আছে। পরিস্থিতি খুব বাজে দিকে এগোচ্ছে।
আইএনটিইউসির শ্রমিক নেতা দেবেশ চক্রবর্তী বলেন, শ্রমিক নিরাপত্তার সাথে কর্তৃপক্ষ সমঝোতা করছে। ওপরে চাকচিক্য আর ভেতর খোকলা হয়ে গেছে। সিজিএম সেফটি শ্রমিক নিরাপত্তার দিকে না তাকিয়ে গেটে ঢোকা বেরোনোর দিকেই কড়া নজরদারি চালাচ্ছে।