দলবদলের জল্পনা নিয়ে কি বললেন মন্ত্রী? বিরোধীরাই বা কি বলছেন তা নিয়ে?
আমার কথা, আসানসোল, ২০ মার্চঃ
“দলবদল করতে পারি, এই নিয়ে মিথ্যা খবর ছড়াচ্ছে কিছু নিউজ পোর্টাল। আমি তৃণমূলে আছি, তৃণমূলেই থাকবো, যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব।” সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করে দলবদলের জল্পনায় জল ঢাললেন মন্ত্রী মলয় ঘটক।
তৃণমূলের এক বড় মাপের নেতা দলবদল করে যোগ দিতে চলেছেন বিজেপিতে। লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে কয়েক দিন ধরেই ছড়িয়েছে এই জল্পনা। যে নেতা বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন সে নাকি রাজ্য মন্ত্রীসভার একজন প্রবীণ মন্ত্রী। স্থানীয় কয়েকটি নিউজ পোর্টাল এই খবর ছড়িয়েছে । কে দল বদল করতে চলেছেন তার নাম উল্লেখ না থাকলেও ইঙ্গিতটা ছিল মন্ত্রী মলয় ঘটকের দিকেই। তাছাড়া বেশ কিছুদিন আগে মন্ত্রীর আসানসোলের বাড়িতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা হানা দিয়েছিল। তদন্তের জন্য বেশ কয়েকবার হাজিরা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় এজেন্সি থেকে সমনও পাঠানো হয়েছে মন্ত্রীকে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মলয়ের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন বিজেপির বিরুদ্ধে আপনাকে কথা বলতে দেখছি না কেন ? এইসব কারণেই মলয় ঘটক তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে ছড়ায় জল্পনা । পোর্টাল নিউজ এর বিষয়টি নজরে আসে মলয় বাবুর। এরপরই মঙ্গলবার রাতে তিনি সমাজ মাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন। পোস্টে তিনি লেখেন ” আজ সকাল থেকে কয়েকটা নিউজ পোর্টাল মিথ্যা ও কাল্পনিক খবর ছাপিয়ে আমার চরিত্র হরণের চেষ্টা করছে। আমি তাদের আইনি নোটিশ দিয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করব। যারা এই ঘৃণ্য চক্রান্তের পেছনে আছেন তাদের মুখোশ অচিরে খুলে যাবে। আমি তৃণমূল কংগ্রেসের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলাম, আছি ও থাকবো । মমতা ব্যানার্জি আমার নেত্রী ছিলেন, আছেন, আজীবন থাকবেন । মা-মাটি-মানুষ জিন্দাবাদ “মলয় ঘটক”। সকাল থেকে মন্ত্রীর দলবদল নিয়ে যে খবর ছড়িয়েছিল জল্পনা, রাতে সেই জল্পনাতে জল ঢেলে দিলেন নিজেই স্বয়ং মন্ত্রী মলয় ঘটক ।
এদিকে, মলয় ঘটকের এই বিষয়ে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন,” এটা ওনাদের দলের আভ্যন্তরীন ব্যাপার, এই বিষয়ে তো আমার কিছু বলার নেই। তবে সংবাদমাধ্যম যদি কিছু খবর করে থাকে সেটা হয়ত কিছুর ভিত্তিতেই করেছে। তবে যদি সেই খবর ভিত্তিহীন হয় তাহলে উনি নিজে আইনমন্ত্রী, আইন মোতাবেক করুন কিছু করার হলে।”
সিপি আইএমের জেলার সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, “বিজেপি আর তৃণমূল কে যে কার ঘরে বাস করে সেটা তৃণমূল বা বিজেপির কেউই জানে না। আর এস এস এর পরিকল্পনা অনুযায়ী জায়গা ঠিক হচ্ছে। তাই ভোটের সময় হলেই দেখা যায় অস্থিরতা। ভোট চলে গেলেই আবার যেখানে যাওয়ার সেই জায়গায় চলে যায়। এর মূল কারন হল অতিরিক্ত বেআইনি সঞ্চয় কিংবা অতিরিক্ত ক্ষমতার জন্য সুরক্ষা কবজের দরকার পড়ে। যদি কেউ অপরাধ না করে তাহলে এত দিল্লি যেতে কেন হচ্ছে? এক্স হ্যান্ডেলেই বা কেন নিজের সপক্ষে এত কিছু লিখতে হচ্ছে? এত প্রমান করতে হচ্ছে কেন?”
কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী বলেন, “ওনার নেত্রী তো নিজেই বলেছেন মলয় বিজেপির সম্বন্ধে কোনো মন্তব্য করে না কেন? মলয়বাবুর বিরুদ্ধে ওনার দলনেত্রীর এই ধরনের মন্তব্য তো স্বভাবতই তার বিজেপিতে যোগের বিষয়ে একটা জল্পনা তৈরী করছে। তাছাড়া একের পর এক ইডি সিবিআইয়ের তলব উনি যেভাবে পাস কাটিয়ে যাচ্ছেন আর দিল্লিতে যেভাবে ঘন ঘন যাতায়াত করছেন তাতে যে কারোরই মনে হতে পারে যে উনি বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন।”