দুর্গাপুরে তৃণমূল প্রার্থীর জনসংযোগে অভিনবত্ব, কি বললেন ভোটাররা?
আমার কথা, দুর্গাপুর, ২১ মার্চঃ
ঘড়ির কাঁটা তখন ৯টা ২৫ ছুঁয়েছে। জমে উঠেছে সকালের সবজি থেকে শুরু করে মাছের বাজার। রোজের মতো আজও পসরা সাজিয়ে বসেছেন দুর্গাপুরের চন্ডিদাস বাজারের বিক্রেতারা। ক্রেতারাও কেনাকাটা করছেন ইতিউতি ঘুরে ঘুরে। দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্মী থেকে শুরু নানা পেশার স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের বাজারের ব্যাগে ভরছেন নিত্য প্রয়োজনীয় শাক সবজি। এরই মধ্যে ঘটে গেল সেই ঘটনা, যার জন্য একদমই প্রস্তুত ছিলেন না ক্রেতা বা বিক্রেতা কেউই। সকলে অবাক করে অপ্র্যাশিত ভাবে বাজারের ব্যাগ হাতে নিয়ে ঢুকলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী। হ্যাঁ প্রচার তো বলাই যায়, কিন্তু এই প্রচারের মধ্যে ছিল অভিনবত্ব। জনতা জনার্দনের মন পেতে একেবার মাটিতে নেমে সাধারন মানুষের মতো বাজার করে ক্রেতা-বিক্রেতাদের তার দেওয়া প্রতিশ্রুতিতে দিলেন শিলমোহর(আমার নামে নিখোঁজের পোস্টার পড়বে না-কীর্তি আজাদ)। দিল্লি থেকে বুধবার ফিরেছেন কীর্তি আজাদ। এরপর বৃহস্পতিবার সকালেই তিনি বেরিয়ে পড়েন জন সংযোগে। বি-জোনের ডেভিড হেয়ারে সকালে প্রথমে একটি মন্দিরে পুজো দেন, তারপর সাইকেল চালিয়ে বাজারের ব্যাগ ঝুলিয়ে মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার ও জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সাথে যান চন্ডিদাস বাজারে। শাক-সবজি, ফলমূল, মাছও কেনেন আর পাঁচজন গৃহস্থের মতোই।
এদিকে সাত সকালে বাজারে প্রার্থীকে ব্যাগ হাতে ঢুকতে দেখে তো অবাক সকলেই। আপ্লুত সেই সব বিক্রেতারাও যাদের কাছে থেকে বাজার সামগ্রী কেনেন এই প্রাক্তন ক্রিকেট তারকা তৃণমূল প্রার্থী। এরপর কীর্তি আজাদ চলে যান কৃত্তিবাসে রোডে। সেখানে চায়ের দোকানে বসেন, সকলের সঙ্গে চা খান। তারপর একটি টোটোতে করে ফের আসেন চন্ডীদাস রোটারির কাছে।
এদিকে প্রার্থীকে এত কাছে পেয়ে কি বললেন বাজারের বিক্রেতারা, আর কিই বা আশা রাখছেন তাঁরা?
প্রার্থী নাম ঠিক মতো জানেন না, শুধু জানেন তিনি তৃণমূলের প্রার্থী। সবজি বিক্রেতা প্রদীপ পাল বলেন আমার থেকে কাঁচা আম, লঙ্কা, পুদিনাপাতা,আমলকি, ধনেপাতা কিনলেন। আমি গর্বিত যে উনি আমার কাছে জিনিস কিনলেন।
আরেক সবজি বিক্রেতা পরিতোষ মন্ডল বলেন, “আমার ভাল লাগলো প্রার্থীকে এভাবে কাছে পেয়ে। আগামীদিনে উনি যদি আবার আসেন তাহলে ওনাকে আমাদের মার্কেটের সমস্যার কথা বলবো”।
এক মাছ বিক্রেতা যার থেকে প্রার্থী ইলিশ মাছ কেনেন তিনি জানান, গতবারের যিনি বিজেপি সাংসদ ছিলেন তিনি আমাদের সমস্যা কি শুনবেন। তাঁকে বাজারে আসা তো দূর আমরা দুর্গাপুরেই গত পাঁচ বছরে সেভাবে দেখিনি।
এদিন প্রার্থীকে এভাবে নিজেদের মধ্যে পেয়ে বেজায় খুশি চন্ডিদাদের বিক্রেতারা। আশায় বুক বাঁধছেন যদি তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ যেতেন তাহলে হয়ত তাদের সমস্যার সমাধান হতে পারে।
এদিকে বাজার শেষে কীর্তি আজাদ বলেন, বাজার করলাম ভাল লাগলো। আমার স্ত্রী আমাকে যা যা নিতে বলেছেন আমি সব নিয়ে যাচ্ছি। এছাড়াও তিনি বলেন সাংসদের উচিত সাধারন মানুষের মধ্যে আসা, তাদের সাথে মেলামেশা করা আর তাদের সমস্যার কথা শুনে সেগুলিকে সমাধান করার।”