পবিত্র খুনের ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন, গ্রেফতার সস্ত্রীক অভিযুক্ত শম্ভূ
আমার কথা, কাঁকসা, ২২ মার্চঃ
প্রতিশ্রুতির ২৪ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ গ্রেফতার করলো গোপালপুরের উত্তরপাড়ার বাসিন্দা পবিত্রর খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শম্ভূ দাস ও তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমা দাসকে। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মুচিপাড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে সস্ত্রীক ধরা পরে অভিযুক্ত। ধৃতদের আদালতে তোলা হলে ছয় দিনের পুলিশী হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশী জেরায় অভিযুক্ত শম্ভূ দাস(৫৫) ও তার স্ত্রী পূর্ণিমা দাস(৪২) মঙ্গলবার রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিবরণ দেয়। পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, শম্ভূ দাসের তিন জন বউ রয়েছে। পূর্ণিমা দাস দ্বিতীয় পক্ষের বউ। এই পক্ষের দুই ছেলে সম্রাট দাস ও বিপুল দাস। শম্ভূ দাস তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই বৌমার সাথে উত্তরপাড়ার বাড়িতে বসবাস করতেন। শম্ভূ দাসের সাথে তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমার দাম্পত্য সম্পর্ক ঠিক না থাকায় তাঁরা আলাদা আলাদা ঘরে থাকতেন। এদিকে মাস দুয়েক হল ওই পাড়ারই যুবক পবিত্র বিশ্বাসের সাথে প্রণয়ের সম্পর্ক তৈরী হয় পূর্ণিমা দেবীর। ঘটনার দিন রাত এগারোটা নাগাদ পবিত্র পূর্নিমাদেবীর সাথে দেখা করতে চায়। কিন্তু তাতে রাজী হন না পূর্ণিমা দেবী। এরপর লাগাতার ফোন করতে থাকে পবিত্র। কিন্তু পূর্ণিমাদেবী ফোন না ধরায় রাত ১টা নাগাদ ধারালো অস্ত্র নিয়ে মদ্যপ অবস্থায় শম্ভূ দাসের বাড়িতে চলে আসে পবিত্র। দরজায় করাঘাত করতে থাকলে পূর্ণিমাদেবী দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে আসেন। তখন মত্ত পবিত্র পূর্ণিমাদেবীর গলা টিপে ধরে। আওয়াজ পেয়ে ঘুম থেকে উঠে আসেন শম্ভূ দাস। পবিত্রকে স্ত্রীর গলা ছাড়তে বললো শুনতে নারাজ পবিত্রকে থামাতে তার হাতে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন শম্ভূ। মদ্যপ অবস্থায় থাকা পবিত্র ভারসাম্য রাখতে না পেরে মাটিতে পড়ে যায় আর মাথায় আঘাত লাগে। শম্ভু দাস এরপর তার ভাইকে দিয়ে পবিত্রর বাড়িতে ফোন করায়। ফোন রাত ৩টে নাগাদ পেয়ে পবিত্রর বন্ধুরা শম্ভু দাসের বাড়ির সামনে আসে। আসে জনা পঁচিশেক এলাকাবাসী। তদের মধ্যে কয়েকজন পবিত্রকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় যেখানে চিকিৎসক পবিত্রকে মৃত বলে জানান। অন্যদিকে তখন উত্ত্রজিত এলাকাবসীদের একাংশ শম্ভু দাসের বাড়ির একাংশে ও একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। অবস্থা বেগতিক বুঝে শম্ভূ দাস তার পরিবার সহ গা ঢাকা দেয়। এদিকে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানাতে থাকেন গ্রামবাসীরা। এমনকি বুধবার পবিত্রও মৃতদেহ সৎকারের জন্য শ্মশানে নিয়ে গেলে সেখান থেকে দেহ তুলে নিয়ে এসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে গ্রামবাসীরা। দুদিন ধরে অগ্নিগর্ভ অবস্থা হয়ে থাকে পরিস্থিতি। অবস্থা আয়ত্বে আনতে ছয়দিনের মধ্যে শম্ভু দাসকে গ্রেফতারের আশ্বাস দেয় পুলিশ। এদিকে আজ ভোরে ১৯ নং জাতীয় সড়ক ধরে গাড়িতে করে যখন সস্ত্রীক পালানোর চেষ্টা করছিল তখন পুলিশ তাদের ধরে ফেলে।