ফিল্মি কায়দায় দুর্গাপুর থেকে ডাককর্মীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়ল ইউ.পি পুলিশ
আমার কথা, দুর্গাপুর, ১৮ জুন:
সরকারি কর্মীকে দুর্গাপুর থেকে ফিল্মি কায়দায় গাড়িতে তুলে নিয়ে পালানোর সময় আসানসোলে নাকা চেকিং এ ধরা পড়লো উত্তরপ্রদেশের পুলিশ। ইউ,পি পুলিশের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করার হুঁশিয়ারি দিলেন সরকারি কর্মী।
সময় সকাল ১০ টা, নবওয়ারিয়া থেকে মোটর বাইকে চড়ে সিটি সেন্টার কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন ডাক বিভাগের কর্মী মাখনলাল মিনা। নব ওয়ারিয়া থেকে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে ওঠার ঠিক আগে একটি চার চাকার গাড়ি এসে তার পথ আটকায়। চারজন গাড়ি থেকে নেমে মাখনলালকে জোর করে গাড়িতে তুলে জাতীয় সড়ক ধরে পালায় তারা। প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি বিষয়টি দেখতে পেয়ে জানায় স্থানীয় পুলিশকে। অপহরণের ঘটনা ভেবে তড়িঘড়ি পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে সমস্ত থানাকে নাকা চেকিং এর বার্তা পাঠানো হয়। শুরু হয় বিভিন্ন এলাকাতে নাকা তল্লাশী। আসানসোলের কন্যাপুর ফাঁড়ির পুলিশ এলাকায় নাকা চেকিং করার সময় সন্দেহবশত একটি চারচাকা গাড়িকে আটকায়। গাড়িটিতে লাগানো ছিল ইউ,পি নাম্বার প্লেট। সেই গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় দুর্গাপুরের পোস্ট অফিস কর্মী মাখনলাল মিনা। গাড়িতে থাকা অন্য ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় উঠে আসে অন্য তথ্য। ইউ,পি পুলিশ বলে পরিচয় দেন তারা। জানান অপহরণ নয় মাখনলাল মিনাকে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তারা আটক করে ইউপি নিয়ে যাচ্ছিলেন। মাখনলাল এর বিরুদ্ধে লুট, চুরির অভিযোগ রয়েছে আগ্রা পুলিশ কমিশনারেটে। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই তাকে আটক করে ইউপি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে জানান তারা। খবর পেয়ে কন্যাপুর ফাঁড়ি থেকে মাখনলাল মিনাকে দুর্গাপুর থানার পুলিশ। সাথে আসেন আগ্রা কমিশনারেটের ওই চার পুলিশ কর্মী। ওই চার পুলিশকর্মীদের মধ্যে একজনের পরনে ছিল হাফপ্যান্ট।
কেন ইউ পি পুলিশের ওই চার কর্মী পশ্চিমবাংলার পুলিশকে বিনা নোটিশে এভাবে মাখনলাল মিনাকে তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছিলেন? উত্তরে তারা জানান, তাদের হাতে সময় ছিল না। মাখনলাল পালানোর মতলবে ছিল, তাই তাড়াহুড়ো করে মাখনলালকে তারা তুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন। আর যাতে মাখনলাল তাদের দেখে বুঝতে না পারে, সেই কারনেই তারা বিনা ইউনিফর্মে এসেছিলেন।
এদিকে ঘটনা সম্পর্কে মাখনলাল মিনা বলেন ডিউটি যাওয়ার পথে দুর্গাপুর থেকে আমাকে অপহরণ করা হয়েছে। আমাকে নিয়ে এরা কোথায় যাচ্ছিল জানিনা। এরা সত্যি ইউপির পুলিশ হলে তাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব বলেও জানান মাখনলাল বাবু।
প্রসঙ্গত: মাখনলাল মিনা রাজস্থানের বাসিন্দা। সিটিসেন্টারে ভারতীয় ডাক বিভাগে কাজ করার সুত্রে নব ওয়ারিয়া এলাকায় স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে বাড়ি ভাড়া করে বসবাস করেন।
ইউ,পি পুলিশের বক্তব্য যদি সত্যি হয় তাহলেও তাদের ভূমিকা ও আচরণ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। কেননা ভিন রাজ্যের পুলিশ কোন অপরাধীকে ধরতে এলে স্থানীয় পুলিশকে সেই বিষয়ে জানানোটা নিয়ম। এছাড়াও অপরাধীকে ধরলে স্থানীয় আদালতে পেশ করার পর ট্রানজিস্ট রিমান্ডে পুলিশ অপরাধীকে ভিন রাজ্যে নিয়ে যায়। এক্ষেত্রে ইউ,পির পুলিশ সেই নিয়ম ভঙ্গ করেছে বলে আইন বিশেষজ্ঞদের মত।