রহস্যজনক ভাবে ফিরে এলো দুর্গাপুরে অপহৃত শিশু সুমিত্রা
আমার কথা, দুর্গাপুর, ১৮ জুন:
মধুরেণ সমাপয়েত, মায়ের কোলে ফিরে এলো ছোট্ট সুমিত্রা। রহস্য জনক ভাবে অপহৃত এক রত্তি সুমিত্রাকে নিজের এলাকায় ফিরিয়ে দিয়ে গেল অপহরণকারীরা। সুমিত্রার পরনে রয়েছে নতুন জামা, আর মুখে হাসি যা দেখে মন জুড়িয়ে গেল বাবা ধর্মেন্দ্র ও মা চায়না সাউয়ের।
প্রসঙ্গত: ১৬ জুন রবিবার রাত ৯টা ৩০ নাগাদ নিজের বাড়ির কাছে তিলক মাঠে দুই দিদির সাথে খেলছিল সুমিত্রা(১বছর ১০ মাস)। আচমকাই একটি বাইকে এক মহিলা ও এক পুরুষ যাদের মাথা হেলমেটে ঢাকা ছিল, তারা মাঠে এসে সুমিত্রাকে বাইকে চড়িয়ে ঘোরানোর নাম করে বাইকে তুলে সুমিত্রার মাথা কাপড়ে ঢেকে নিয়ে চম্পট দেয়। ঘটনার পরে পুলিশ তদন্তে নামে। সীমান্ত এলাকাগুলি নাকা বন্দী করা হয়, নাকা তল্লাশি জোরদার করা হয়। নানা জায়গার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ। নানা সোর্সকেও কাজে লাগায় পুলিশ। কিন্তু কোনো ভাবেই সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। এদিকে যত সময় যাচ্ছিল ততই উদবেগ বাড়ছিল সুমিত্রার পরিবারের। পাশাপাশি চাপ সৃষ্টি হচ্ছিল পুলিশ মহলেও। এই পরিস্থিতির মাঝে আচমকাই আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যে ৮টা ৩০ নাগাদ ওই শিশুটিকে বাড়ির কাছেই নামিয়ে দিয়ে যায় অপহরণকারীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি চার চাকা সাদা গাড়িতে করে তিলকের মাঠে সুমিত্রাকে নামিয়ে দিয়ে যায় কেউ বা কারা৷ তবে গাড়িতে কতজন ছিল সেটা বোঝা যায়নি। মাঠের মধ্যে একটি বাচ্চার কান্নার আওয়াজ পেয়ে তিলক বস্তির মানুষজন গিয়ে দেখেন মাঠে সুমিত্রা। এরপরেই হইচই পড়ে যায়। খবর পেয়ে সাথে সাথে ছুটে আসেন দুর্গাপুর থানার পুলিশ সহ ডিসিপি(পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা।
ডিসিপি জানান, “গত পরশু বাচ্চাটিকে অপরহন করার পর আমাদের পুরো পুলিশ টিম তদন্তে নেমে পড়ে। এরই মধ্যে আজ শিশুটিকে অপহরণকারীরা ফিরিয়ে দিয়ে গেছে। এটা অবশ্যই ভালো খবর। তবে আমরা এই ঘটনায় বেশ কিছু সুত্র পেয়েছি আর এই সুত্র ধরে আমরা অপহরনকারীদের খুব তাড়াতাড়ি ধরে ফেলবো”
তবে সুমিত্রার অপহরণের রহস্যের জট এখনো পুরোপুরি কাটেনি। প্রশ্ন উঠছে কেন সুমিত্রাকে অপহরন করা হয়েছিল? যারা অপহরন করলো তারা আচমকা কেনই বা দুদিনের মাথায় আবার সুমিত্রাকে ফিরিয়ে দিয়ে গেল? পুলিশের তৎপরতার কাছে কি বশ্যতা স্বীকার করলো অপহরণকারীরা? তাহলে কি কোথাও অপহরণকারীদের মনে হয়েছিল সুমিত্রাকে অপহরন করে তাদের বিপদের সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছিল?
তবে, সুমিত্রার জ্যাঠা জিতেন্দ্র সাউ বলেন, “আমরা জানি না কেন বাচ্চাকে অপহরণ করা হয়েছিল। তবে আমাদের বাচ্চা সুস্থ ভাবে ফিরে এসেছে, এর থেকে আনন্দের আর কিছু নেই। পুলিশের ভূমিকাতেও আমরা সন্তুষ্ট”।