ব্যাঙ্গালুরুতে উদ্ধার দুর্গাপুরের ছাত্রীর মৃতদেহ, মৃত্যু ঘিরে রহস্য
আমার কথা, দুর্গাপুর, ৭ জুলাই:
হাতে মাত্র আর কয়েক মাস।তার পরেই মামার মেয়ের বিয়ে।মামার মেয়ের বিয়েতে কিভাবে আনন্দ করবে সেই নিয়েই শনিবার সন্ধ্যায় শেষ বার মায়ের সাথে কথা।তার পরেই রাতে আসে দুঃসংবাদ। ফোন পেয়েই নিমেষের মধ্যে কান্নায় ভেঙে পরে গোটা পরিবার।কান্নার আওয়াজ পেয়ে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। কাঁকসার গোপালপুরের সত্যনারায়ন পল্লীর বাসিন্দা দেবাশীষ মন্ডলের একমাত্র মেয়ে ২১বছর বয়সী দিয়া মন্ডল। নার্সিং পড়তে গত দু বছর আগে ব্যাঙ্গালুরুর মাদার টেরেসা গ্রূপ অফ ইন্সটিটিউশনে ভর্তি হয় সে।সেখানেই সে নার্সিং নিয়ে পড়াশোনা করতো।ওই কলেজেরই সহপাঠী ওই দিন রাতে দিয়ার বাড়িতে ফোন করে তার মৃত্যুর কথা জানায়।
দিয়ার বাবা দেবাশীষ মন্ডল জানিয়েছেন,তার মেয়ে অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের ছিল। তার মেয়ের এক সহপাঠী ফোন করে হোস্টেলের ঘর থেকে দিয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের কথা জানায়।খবর পাওয়ার পরই তার গোটা পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়ে।তিনি জানিয়েছেন রান্নার কাজ করে মেয়েকে পড়াশোনা করতে পাঠিয়েছিলেন ব্যাঙ্গালুরুতে।তার মেয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে চেয়েছিল।রবিবার সকালেই দেহ কাঁকসার গোপালপুরে ফিরিয়ে আনতে বেঙ্গালুরুর উদ্যেশ্যে অন্ডালের বিমানবন্দর থেকে প্লেনে চেপে রওনা দিয়েছেন তিনি।তিনি জানিয়েছেন কোনো এক যুবক তাকে খুব বিরক্ত করতো।সেটা দিয়ার সহপাঠীদের কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন।এই বিষয়ে দিয়াও তার মাকে ফোনে বারবার বলতো।সেই কারণেই কি আত্মহত্যা নাকি মৃত্যুর পিছনে রয়েছে অন্য কোনো কারণ।সেই নিয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে।
দিয়ার মা বনানী মন্ডল জানিয়েছেন,পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের এক যুবক তাকে বিরক্ত করতো।এই কথা শনিবার সন্ধ্যাতেও জানিয়েছিল ফোনে।মামার মেয়ের বিয়ে নিয়ে অনেক হাসাহাসি করে।কিন্তু তার পরে হটাৎ করে কি হলো তা আর জানা নেই।
প্রতিবেশী শিবানী হালদার জানিয়েছেন,তাদের পাড়ার মেয়ে অত্যন্ত হাসিখুশি ও মিশুকে স্বভাবের ছিলো।এক যুবকের বিরুদ্ধে তাকে বিরক্ত করার কথা উঠে আসছে।সেই নিয়েই কিছু হয়েছে নাকি অন্য কারণ তা জানা নেই।তবে দিয়া কখনো আত্মহত্যা করার মত মেয়ে নয়।সে উল্টে সকলকে সাহস দিতো।পরিবারের পাশাপাশি ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী।এর আগেও এক ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল।বারবার এমন ঘটনায় ছাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দিয়ার পরিবার সহ এলাকাবাসী।এলাকাবাসীর অভিযোগ দিয়া ঘরে ফোনে জানতো হোস্টেলে খাবার দাবার একদম ভালো দিতো না।সন্ধ্যা ৭টায় রাতের খাবার দিয়ে দেওয়া হতো তার পর রাতে তারা কি খেত কি না খেত তার কোনো খোঁজ নিতো না।এছাড়াও মাঝে মধ্যেই কলেজে টাকার জন্য চাপ দিতো দিয়াকে।সে কথাও ফোনে জানিয়েছিল দিয়া।
রবিবার ব্যাঙ্গালুরু পৌঁছে দিয়ার বাবা স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।এর পরেই পুলিশের সাহায্যে রবিবার সন্ধ্যায় দেহ কাঁকসায় আনার প্রস্তুতি শুরু করেন।