জীবিত স্ত্রীর নাম ডেথ সার্টিফিকেট! গ্রেফতার স্বামী সহ দুই সাহায্যকারী
আমার কথা, কাঁকসা, ৬ সেপ্টেম্বর:
বেআইনিভাবে স্ত্রীর নামে মৃত্যুর জাল শংসাপত্র বের করার অভিযোগে স্বামী চঞ্চল সমাদ্দার সহ বাসুদেব চ্যাটার্জী ও শংকর ভৌমিক নামের মোট তিনজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল কাঁকসা থানার পুলিশ। সেপ্টেম্বর মাসের ৪ তারিখে কাঁকসা গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শ্রীনন্দা রায় মহান্তি কাঁকসা থানায় মৃত্যুর জাল শংসাপত্র তৈরি করার বিষয়ে অভিযোগ জানান। অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাত্রে তিনজনকে গ্রেফতার করে কাঁকসা থানার পুলিশ। কাঁকসা থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে শংকর ভৌমিকের বাড়ি কাঁকসার পানাগড় গ্রামে। চঞ্চল সমাদ্দারের বাড়ি কাঁকসার দু’নম্বর কলোনী এলাকায় এবং বাসুদেব চ্যাটার্জী কাঁকসার বাসিন্দা এবং পানাগড় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তিনি কর্মরত রয়েছেন। জানা গেছে গত জুন মাসের ২৫ তারিখে প্রতিমা সমাদ্দার নামের এক মহিলার মৃত্যু হয়। মৃত মহিলার স্বামী চঞ্চল সমাদ্দারের সাথে শ্বশুরবাড়ির বনিবনা না হওয়ায়।স্ত্রীর নামের মৃত্যর শংসাপত্র পাচ্ছিলেন না হাতে। প্রতিমা সমাদ্দারের নামে যে সমস্ত ব্যাংকের ঋণ ছিল। সেই ঋণ মুকুব করার জন্য তিনি শ্বশুরবাড়ির লোকেদের কাছে নথিপত্র চান। কিন্তু কোনরকম নথিপত্র না পাওয়ার পর শংকর ভৌমিকের সাথে যোগাযোগ করেন স্বামী চঞ্চল সমাদ্দার। টাকার বিনিময়ে শংকর ভৌমিক পানাগড় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মী বাসুদেব চ্যাটার্জীকে দিয়ে স্ত্রীর নামের জাল মৃত্যুর শংসাপত্র তৈরি করান গোপালপুর পঞ্চায়েত প্রধানের সই জাল করে। সেই জাল শংসাপত্র দিয়ে ব্যাংকের সমস্ত ঋণ মকুব করা হলেও লক্ষীর ভান্ডারের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার জন্য গত আগস্ট মাসে কাঁকসার বিডিও অফিসে যেতেই ওই জাল শংসাপত্র দেখে বিডিও অফিসের আধিকারিকদের সন্দেহ হওয়ায়। তারা এই বিষয়ে গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের কাছে চিঠি পাঠান। গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর গত সেপ্টেম্বর মাসের ৪ তারিখে গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে কাঁকসা থানায় জাল শংসাপত্র তৈরি করার বিষয়ে অভিযোগ জানালে অভিযোগের ভিত্তিতে কাঁকসা থানার পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে শুক্রবার দুপুর ১টা নাগাদ মহকুমা আদালতে পেশ করলে বাসুদেব চ্যাটার্জিকে জেল হেফাজত এবং চঞ্চল সমাদ্দার ও শংকর ভৌমিক কে চার দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের বিচারক।
গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শ্রীনন্দা রায় মহান্তি জানিয়েছেন, ওই সার্টিফিকেটে গত এক বছরের আগের তারিখ দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় ওই পঞ্চায়েতে অন্য প্রধান দায়িত্ব ছিলেন। শংসাপত্রটি দেখে তারা বুঝতে পারেন ওটির জাল শংসাপত্র। এরপরেই তারা প্রশাসনকে জানান। এই জাল শংসাপত্র তৈরি করেন দুজন। তারাই চঞ্চল সমাদ্দারের হাতে ওই শংসাপত্র তুলে দিয়েছিলেন।