ফের হরিশপুর গ্রামে ধস, পুনর্বাসনের দাবিতে এবার জাতীয় সড়ক অবরোধ
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান, ২০জুলাইঃ
অন্ডালের হরিশপুরে ফের ধস। ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কিছু ঘরবাড়ি। মাটিতে চাপা পড়ে যায় একাধিক গাড়ি। আতঙ্কে একদিকে যেমন গ্রাম ছাড়ছেন গ্রামবাসীরা, তেমনি অপরদিকে পুনর্বাসনের দাবিতে ২নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা।
প্রসঙ্গতঃ চলতি মাসের ১৬ তারিখ ২ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে এক কিলোমিটার দূরে ওই গ্রামের রাস্তায় প্রায় একশ মিটার এলাকা জুড়ে ধস নেমেছিল।
অন্ডালের টপ লাইন থেকে বহুলা যাবার প্রধান রাস্তায় যে রাস্তার ওপর পড়ে হরিশপুর গ্রাম। ফের গতকাল রবিবার গভীর রাতে বিকট শব্দের সঙ্গে এলাকাটির একাংশ বসে যায় বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা তপন পাল ।
গ্রামের ১০ থেকে ১৫ টি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এই বাড়িগুলি কমপক্ষে ৫ ফুট মাটিতে বসে যায় বলে স্থানীয়রা জানান। এই ঘটনায় হরিশপুর গ্রামে থাকা ৫৫০ টি পরিবার আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
সকাল থেকেই ঘরের আসবাবপত্র এবং গবাদি পশু নিয়ে অন্যত্র যেতে দেখা যায় গ্রামবাসীদেরকে।
তপন বাবুদের অভিযোগ ১৯৯৮ সাল থেকে এলাকায় ইসিএলের একটা খোলামুখ খনি রয়েছে। সেই খনির কয়লা উত্তোলনের কারণে এই হরিশপুর এলাকা ধস প্রবন। বারবার এলাকায় ধসের ঘটনা প্রায় ঘটতে থাকে। ইসিএল আধিকারিক থেকে শুরু করে প্রশাসন, আসানসোল-দুর্গাপুর ডেভলপমেন্ট অথরিটি ,স্থানীয় প্রশাসন প্রায় সকলকেই গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে গ্রামের পুনর্বাসনের দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু আগেও খনির থেকে ছিটকে আসা পাথরের আঘাতে আহত হয়েছিল হরিশপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক স্কুল পড়ুয়া। ১৬ জুলাইয়ের ঘটনার পর অন্ডালের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক ও থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভও দেখান গ্রামবাসীরা। এরপর বিষয়টি জানার পর ইসিএল কর্তৃপক্ষ, বিডিও সহ আধিকাইকদের সাথে একটি বৈথকও করেছিলেন জেলাশাসক পূর্নেন্দু মাজি। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যতক্ষন না স্থায়ী কোনো বন্দোবস্ত হচ্ছে ততদিন অস্থায়ীভাবে হরিশপুর গ্রামে বসবাসকারী পরিবারগুলিকে ইসিএলের যে ফাঁকা আবাসনগুলি রয়েছে সেগুলিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। ইন্তু এরপরেও কোনো কাজ না হওয়ায় শেষে আজ গ্রামবাসীরা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে পুনর্বাসনের দাবি জানাতে থাকেন।
এদিকে আজকের এই ভয়ঙ্কর ধসের ফলে হরিশপুর গ্রাম প্রায় জনমানব শূন্য। স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে যথেষ্ট।