বাগান পরিষ্কার করতে গিয়ে অম্বুজায় চিকিৎসকের বাড়িতে ডাকাতির ছক, পুলিশের জালে তিন দুষ্কৃতি
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ৬ আগস্টঃ
আবারও দুর্গাপুর পুলিশের বড় সাফল্য আর সেই সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা নিতে দেখা গেল ফের সেই সিসিটিভি ক্যামেরাকে। দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের বেঙ্গল অম্বুজায় চিকিৎসকের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে তিনজন দুষ্কৃতি ধরা পড়ল পুলিশের জালে আর তা মাত্র ঘটনার দশ দিনের মাথাতেওই। প্রসঙ্গতঃ গত ২৭ জুলাই দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার মেন হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক শরৎচন্দ্র কর্মকারের বাড়িতে দুপুর তিনটে নাগাদ তিনজন দুষ্কৃতি হানা দেয়। ডাকাতি করে নিয়ে যায় নগদ ৩৫ হাজার টাকা, দেড় ভরি গয়না সহ চিকিৎসক ও তাঁর স্ত্রীর মোবাইল দুটি। লিখিত অভিযোগ জানানোর পর তদন্তে নামে পুলিশ।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, তদন্ত শুরু করে পুলিশ প্রথমেই ওই এলাকায় সমস্ত সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে তা খতিয়ে দেখে। এরপর সস্ত্রীক চিকিৎসকের মোবাইল ফোনের সুত্র ও গোপন সুত্রে পাওয়া খবরের উপর ভিত্তি করে তদন্ত এগোতে থাকে। তদন্ত উঠে আসে এই তিন যুবকের নাম। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ওই তিন দুষ্কৃতিকে চিহ্নিত করা হয়। গতকাল অর্থাৎ বুধবার রাতে ইমরান খান, সেখ আইজিজুল ও সেখ আবদুল নামে ওই তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃত তিনজনেই নিউটাউনশিপ থানার অন্তর্গত জেমুয়া গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
জানা যায় যে, সেখ আবদুল ওই চিকিৎসকের বাড়িতে ঘর পরিষ্কার সহ বাগান পরিষ্কারের কাজ করত। তার থেকেই ওই বাড়িতে ডাকাতির বিষয়টি মাথায় আসে। এরপর সে তার বন্ধু সেখ আজিজুলের সাথে ডাকাতির ছক কষে। ছক অনুযায়ী ঘটনার দিন দুই বন্ধু সাথে তৃতীয় দুষ্কৃতি সেখ ইমরান দুপুর তিনটে নাগাদ ওই চিকিৎসকের বাড়িতে গিয়ে প্রথমে কলিং বেল বাজায়। দরজা খোলার সাথে সাথে তাঁরা চিকিৎসককে ধাক্কা দিয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকিয়ে নেয়। এরপর ধারালো ছুরি দিয়ে ভয় দেখিয়ে ডাকাতি করে। বাধা দিতে গেলে চিকিৎসকের স্ত্রীকেও মারধর করে তিন অভিযুক্ত। ডাকাতির শেষে তারা পালিয়ে যায়। ডাকাতির সময় ওই তিন দুষ্কৃতি মুখে মাস্ক পরে থাকায় তাঁরা সেখ আবদুলকে চিনতে পারেনি বলে পুলিশকে জানিয়েছিলেন চিকিৎসক। এই ঘটনায় ওই তিন দুষ্কৃতি একটি বাইক ব্যবহার করেছিল যা পুলিশ উদ্ধার করেছে। সাথে উদ্ধার হয়েছে ১৪ হাজার টাকা ও কিছু গয়না ও মোবাইল ফোন দুটি।
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি(পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা জানান যে, “ধৃত তিন অভিযুক্তকে জেরা করে কিছু নগদ ও গয়না উদ্ধার হয়েছে। সাথে উদ্ধার হয়েছে ডাকাতির সময় পরে থাকা একজনের পোশাক। এছাড়াও অভিযুক্তরা জানিয়েছে বাকি গয়নার সন্ধানও তাঁরা জানাবে। অভিযুক্তদের দশদিনের পুলিশী হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে। এই ঘটনার ক্ষেত্রে সিসিটিভি ফুটেজ আমাদের তদন্তে অনেক বড় সাহায্য করেছে। আমরা তাই বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থা যেমন হোটেল, পেট্রোল পাম্প, শপিং মলগুলির বাইরে যাতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয় তার জন্য অনুরোধ করেছি। আশা করছি এতে হয়ত দুর্গাপুরে অপরাধ অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারব।”