দুর্গাপুরে “কালা দিবস” এর স্বত্ব নিয়ে বাম বিজেপির দ্বন্দ্ব, প্রতিবাদ কর্মসূচী দুর্গাপুর নগর নিগমের সামনে
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(আসানসোল), ১৩ আগস্টঃ
২০১৭ সালের ১৩ আগস্ট দুর্গাপুর নগর নিগমের নির্বাচন হয়েছিল আর সেই নির্বাচন সুস্থ স্বাভাবিক নির্বাচন হয়নি। নির্বাচনে অবাধে ভোট লুট করে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ভোটের নামে প্রহসণ হয়েছিল এমনই অভিযোগ বাম ও বিজেপির। তাই এই দিনটিকে “ব্ল্যাক ডে” হিসেবে পালন করে আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দুর্গাপুর নগর নিগমের সামনে পথ অবরোধ করেন সিপিআই(এম) কর্মী সমর্থকরা। সিপিআই(এম) নেতা পঙ্গকজ রায় সরকার বলেন যে, তিন বছর আগে আজকের দিনে দুর্গাপুর নগর নিগমের ভোট লুট অন্য সাধারন ভোট লুটের মতো ছিল না। সাত দিন ধরে বাইরে থেকে গুন্ডা এনে দুর্গাপুরের মানুষকে গৃহবন্দী করে রেখে নির্বাচন করা হয়েছিল। আমরা তিন বছর ধরে এই দিনটিকে ব্ল্যাক ডে বলে পালন করে আসছি।
অন্যদিকে এই একই ইস্যুতে দুর্গাপুরে মিছিল করে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয় বিজেপির পক্ষ থেকেও। এদিনের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু বলেন যে, তিন বছর আগে পুরসভা নির্বাচনে দুর্গাপুরের মানুষ দেখেছিলেন গণতন্ত্রকে নিগৃহীত হতে। ব্যাপক হারে সন্ত্রাস করে হার্মাদ বাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সাহায্যে দুর্গাপুরের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আজ সেই প্রতিবাদের দিন।
এদিকে সিপিআই(এম) নেতা পঙ্কজ রায় সরকার দাবি করেন যে ২০১৭ সালের সেই দিনই সন্ধ্যেবেলা আমরা গণতন্ত্রের “ব্ল্যাক ডে” বলে ঘোষণা করি আর প্রতিবছর এই দিনটিকে পালন করছি। অথচ আজ বিজেপি আমাদের দেখে এই দিনটাকে নকল করছে। তবে নকল করলে সবটাইকেই ঠিক করে নকল করতে হবে। যাই হোক আমরা এই নকল করাটাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।
অপরদিকে বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বামেদের “ব্লাক ডে” আন্দোলন নকল করা নিয়ে মন্তব্য করেন বামেদের অস্তিত্ব আছে নাকি? প্রতি বছর আমরা এই দিনটিকে পালন করে আসছি। বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু জানান যে গত বছরও আমি এসেছিলেম আর এই দিনে প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হয়েছিলাম।
এদিকে, দুর্গাপুর নগর নিগমের এই ভোটলুটের বিষয় প্রসঙ্গে বাম ও বিজেপিকে এক হাত নেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারী। ২০১৭ সালের ১৩ অগাস্ট দুর্গাপুর নগর নিগম নির্বাচনের দিন বাম বিজেপির আনা ভোট লুটের অভিযোগকে রাজনৈতিক জোকারের মন্তব্য বলে ব্যাখ্যা করেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি। দুর্গাপুরে ভোটের পর তাঁরা তো উচ্চ আদালতে মামলা করেছিলেন। সেখানে কি হল? আদালতের উপরে তো আমরা কেউ নই। তাঁরা যে দোষারোপ করছেন সেটা যদি সত্যিই আমরা করতাম তাহলে আমাদের বিরুদ্ধে আদালত রায় দিতেন। সেটা যখন হয়নি তার মানে সব ঠিকঠাকই ছিল।
এদিন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয়েছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী।