দুর্গাপুর দিয়ে শুরু, সংক্রমন আটকাতে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার অভিনব পরিকল্পনা
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ২৭আগস্টঃ
করোনা সংক্রমণ এড়াতে চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে সারা দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণা করা হয় কেন্দ্র সরকারের তরফে। আর এই লকডাউনের কারনে ভিন রাজ্যে বহু মানুষ আটকে পরেছিলেন যারা এই রাজ্যের বাসিন্দা। যাদের মধ্যে রয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিক, পড়ুয়া। তাদের নিজেদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এরকম সাড়ে চার লক্ষ বাংলার মানুষকে রাজ্যে ফিরিয়ে আনতে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার বারো হাজার বাসকে ব্যবহার করা হয়েছিল। আর এই সাড়ে চার লক্ষ মানুষকে বাংলায় ফিরিয়ে আনতে গিয়ে করোনায় আক্রান্তও হয়েছেন এই সংস্থার ৩৫জন কর্মী যাদের মধ্যে ছিলেন বাসচালক, কন্ডাক্টার কিংবা বাসকর্মী । শুধু তাই নয় এই পরিষেবা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছেও একজন বাসকর্মীর যিনি আসানসোলের বাসিন্দা। এরকমই তথ্য দিলেন দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার চেয়ারম্যান কর্ণেল দীপ্তাংশু চৌধুরী।
আজ বুধবার দুর্গাপুরে সিটিসেন্টারে একটি সাংবাদিক বৈঠকে চেয়ারম্যান এই তথ্য দিতে গিয়ে জানালেন যে করোনা আবহে লকডাউনের কারনে বাংলার মানুষদের পরিষেবা দিতে গিয়ে যে অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা হয়েছে বাসকর্মীদের সেক্ষেত্রে তাদের সাথে বাসের যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে মূলতঃ করোনা সংক্রমণ এড়াতে খুব তাড়াতাড়ি আরো উন্নতমানের পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনা নিতে চলেছে দক্ষিনবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা। কর্ণেল দীপ্তাংশু চৌধুরী জানান যে, বাসযাত্রীদের জীবানুমুক্ত পরিষ্কার পরিষেবা দিতে চারটি ‘বে’(Bay) বানানো হবে। অর্থাৎ একটি বাস যাত্রী পরিষেবা দিয়ে ফেরার পর ভীষণ অপরিষ্কার হয়ে যায়। তাই পুনরায় সেই বাসটিকে যাত্রী পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করতে চারটি ধাপে পরিষ্কার করে জীবানুমুক্ত করা হবে। প্রথম ধাপে জল দিয়ে পুরো বাসটিকে ধুয়ে দেওয়া হবে। এরপর দ্বিতীয় ধাপে উচ্চ চাপযুক্ত যন্ত্রের মাধ্যমে বাসের ভেতরের ধূলো, বাসের ভেতর যাত্রীদের ফেলে দেওয়া খাবারের প্যাকেট সহ বর্জ্য টেনে নেবে। তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপে বাসের আসন, জানলা, দরজা সহ পুরো বাসকে জীবানুনাশক দিয়ে জীবানুমুক্ত করা হবে। এই পুরো প্রক্রিয়ার জন্য সময় লাগবে মাত্র ষোলো মিনিট।
এছাড়াও কর্ণেল দীপাংশু চৌধুরী আরো জানান যে, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার অন্তর্গত মোট ষোলোটি ডিপো ও বাস টার্মিনাসে এই পরিষ্কার প্রক্রিয়ার জন্য যে মডেল তৈরী করা হবে যার মধ্যে প্রথম মডেল তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে দুর্গাপুরের জন্য। আর আসন্ন দুর্গাপুজোর সময় থেকেই যাতে যাত্রীদের এই জীবানুমুক্ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিষেবা দেওয়া যেতে পারে তার জন্য খুব শিগগিরি কাজ শুরু করতে চলেছে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা।