বুদবুদের স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে ছিনতাইয়ের ঘটনায় দুর্গাপুর পুলিশের জালে মূল চক্রী সহ পাঁচজন
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ৩সেপ্টেম্বরঃ
বুদবুদে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে ছিনতাইয়ের ঘটনার তদন্তে সাফল্য পেল আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের দুর্গাপুর পুলিশের বিশেষ দল। ঘটনার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে পুলিশ পাঁচজন দুষ্কৃতি সহ বেশ কিছু সোনার গয়না ও নগদ সাথে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করল। ধৃতদের চোদ্দ দিনের পুলিশী আবেদনে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হবে শুক্রবার।
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি(পুর্ব) অভিষেক গুপ্তা জানান, গত ১৪ আগস্ট বিকেল ৫টা ৩০ নাগাদ বুদবুদের স্বর্ণ ব্যবসায়ী সৌম্য সরকার দোকান বন্ধ করে যখন বুদবুদেই তাঁর শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন নিজের বাইকে তখন অপর একটি বাইকের করে তিওনজন দুষ্কৃতি তাঁর উপর চড়াও হয়। ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে চার রাউন্ড গুলি চালায়। এরপর ব্যবসায়ীর থেকে একটি ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ব্যাগে দেড় লক্ষ টাকা নগদ ও আট ভরি সোনার গয়না ছিল। গুলি ব্যবসায়ীর মাথা ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়। তাঁকে বর্ধমানে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এই ঘটনায় বেশ চাঞ্চল্য ছড়ায়। তদন্তের স্বার্থে একটি বিশেষ দল তৈরী করা হয়। সেই দলে ছিলেন এসিপি (কাঁকসা)শ্বাশতী শ্বেতা সামন্ত, সি আই(বি) অর্ঘ্য মন্ডল, বুদবুদ থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক প্রমিত গাঙ্গুলী ও বি জোন ফাঁড়ির আধিকারিক মনোরঞ্জন মণ্ডল। তদন্তে নেমে প্রথমেই ঘটনাস্থলে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। সাথে গোপন সুত্রে পাওয়া খবরের ওপর ভিত্তি করে তদন্ত এগোতে থাকে। তদন্তে জানা যায় যে বাইকে করে অপরাধীরা অপরাধ সংগঠিত করেছিল সেটিও ছিল চোরাই বাইক, ফলে বাইকের নাম্বারের সুত্র সেভাবে তদন্তে খুব একটা কাজে লাগেনি। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ এক্ষেত্রে বড় ভুমিকা নিয়েছিল বলে জানান ডিসিপি(পূর্ব)। ধরা পরে পাঁচজন অভিযুক্ত। ধৃতরা প্রত্যেকেই পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা ছিল। গতকাল এই পাঁচজনকে বিভিন্ন জায়গা থেকে ধরা হয়। যেহেতু এই পাঁচজন অন্য জেলার ছিল তাই অভিযুক্তদের ধরতে কিছুটা বেগ পেতে হয় পুলিশকে।
ডিসিপি(পুর্ব) আরো জানান যে, ঘটনার বেশ কিছু দিন আগে থেকেই ছক কষা হচ্ছিল। পারাজের বাসিন্দা লোকমান সেখ যে এই ঘটনার রেইকি করেছিল। নজর রেখেছিল স্বর্ণ ব্যবসায়ীর উপর। এরপর ঘটনার মূল চক্রী মঙ্গলকোটের বাসিন্দা সেখ সাহিনকে পুরো বিষয়টি জানায় লোকমান সেখ। এরপর সেখ সাহিন মঙ্গলকোটেরই বাসিন্দা চঞ্চল সেখ, রাকেশ সেখ ও বর্ধমান সদরের সাহিল মন্ডলকে এই কাজের দায়িত্ব দেয়। এরপর সাহিন, রাকেশ ও চঞ্চল বাইকে করে এসে সৌম্য মন্ডলের উপর হানা দিয়েছিল। ধৃতদের কাছ থেকে একটি নাইন এম এম দেশি পিস্তল, এক রাউন্ড ফাঁকা কার্তুজ, কিছু সোনার গয়না, নগদ প্রায় হাজার দশেক টাকা পাওয়া গেছে ধৃতদের কাছ থেকে। বাকি যেটুকু জিনিস রয়েছে তা অভিযুক্তদের জেরা করে পুলিশ জানার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে ডিসিপি(পূর্ব) জানান যে, এই ঘটনার সাথে যুক আরো এক ব্যাক্তি রয়েছে যে এখনও ধরা পড়েনি, তার সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ। তবে তদন্তের স্বার্থে তার নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ।