দুর্গাপুরে জলের সমস্যা মিটতে পারে মঙ্গলবার, আশ্বাস পুরসভার জলদপ্তরের মেয়র পারিষদের
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ১লা নভেম্বরঃ
২০১৭ তারপর ২০২০, এই তিন বছরের মধ্যে দুর্গাপুরে একই বিপত্তি। ব্যারেজের লকগেট ভেঙ্গে শহরে তৈরি হল জল সংকট, আর এই জল সংকটের জেরে পানীয় জল থেকে শুরু করে নিত্য কাজের জন্য প্রয়োজনীয় জলের অভাব দেখা দিলো শিল্পাঞ্চলে। ভোর সাড়ে পাঁচটায় যখন ৩১নং লকগেটের একাংশ ভেঙ্গে হু হু জল বের হতে শুরু করে তখনই তড়িৎ গতিতে শহরে খবরটি ছড়িয়ে পড়ে আর তখনই শহরবাসী বুঝে যান যে আবারও জল সংকটের মধ্যে পড়তে হচ্ছে তাদের। এদিকে ২৪ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও সেভাবে মেরামতির কাজই শুরু করতে পারেননি ইঞ্জিনিয়াররা। যদিও তাদের দিক থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে যে মেরামতির ৪৮ ঘন্টার মধ্যে শহরবাসী পুনরায় জল পেতে শুরু করবেন। এদিকে রাত পেরিয়ে দিন হলে দুর্গাপুরের বিভিন্ন জায়গায় জলের ঘাটতি দেখা দিতে শুরু করে। সকালে বেশ কিছু জায়গায় জলের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পানীয় জল সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জল পেতে কিছু কিছু এলাকার মানুষজনকে বালতিতে করে গিয়ে ট্যাংকার থেকে জল ভরে ভরে নিয়ে আসতে দেখা যায়। এদিকে শহরবাসীর জলকষ্টের সুযোগ নিত্যে দেখা গেল কিছু অসাধু ব্যবসায়ীকে। দুর্গাপুরের চন্ডীদাস মার্কেটে মিনারেল ওয়াটার অর্থাৎ বোতলের জল কালোবাজারী করতে দেখা যায়। বি জোনের বিদ্যাপতি রোডের বাসিন্দা সুকুমার পালের অভিযোগ, “খাবার জল কিনতে গেছিলাম চন্ডীদাস বাজারে। অন্য সময় যে জলের বোতল ৪০ টাকায় কিনি, আজ আমাদের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সেই জলের বোতলই বিক্রি করছে ১০০টাকায়।”
দুর্গাপুর নগর নিগমের জল দপ্তরের মেয়র পারিষদ পবিত্র চ্যাটার্জী জানান, “যেটুকু জল আমরা ধরে রেখেছিলাম, তার বেশীরভাগই আমরা সরবরাহ করেছি। কিন্তু প্রতিদিন যতটা জল আমরা সরবরাহ করি ততটা জল আমরা দিতে পারিনি। তবে ডিপিএল থেকে যে যে জায়গায় জল সরবরাহ করে আজ সেই সব জায়গা যেমন ডিপিএল টাউনশিপ, বিধাননগর, করঙ্গপাড়া, এস বি মোড় সহ বেশ কিছু জায়গায় তাঁরা জল দেয়নি। সেই সব জায়গায় আমরা কিছু কিছু জলের ট্যাংকার দিয়ে সাপোর্ট দিয়েছি। এছাড়া ডিএসপি এলাকা বা ডিএমসি এলাকাগুলিতে যে যার মতো জল সরবরাহ করাতে আজ জলের চাপ কম ছিল, কিন্তু আগামীকাল থেকে বিভিন্ন ওয়ার্ডের জলের ট্যাংকারের মাধ্যমে জল সরবরাহ করতে হবে। যাতে অন্ততঃ পানীয় জল আর নিত্য প্রয়োজনীয় কাজের জন্য সেই জল তাঁরা ব্যবহার করতে পারেন। আশা করছি আগামী পরশু অর্থাৎ মঙ্গলবার রাতে ব্যারাজের পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে। আজ সন্ধ্যে থেকে কাজ শুরু হলে আগামীকাল সন্ধ্যের মধ্যে আশা করা যাচ্ছে মেরামতের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। এরপর পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়তে শুরু করলে ১০-১২ঘন্টা সময় লাগবে দুর্গাপুরে এসে জল পৌঁছোতে। মঙ্গলবার রাত থেকে সম্ভবতঃ জলের পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাতে পারে।”