দু বছরেই ন্যায় বিচার, দুর্ঘটনায় মৃত দুর্গাপুরের ব্যবসায়ীর পরিবার পেলেন সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ১০ডিসেম্বরঃ
মানুষের জীবনের থেকে অর্থ হয়ত বড় নয় কিন্তু সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে অর্থ তো অবশ্যই দরকার। তার উপর যদি সেই পরিবার একমাত্র উপার্জনকারীকে হারায় তাহলে সেই পরিবার তো নিশ্চিত রূপে আর্থিক অনটনের মধ্যে পড়বে। এরকমই একটি ঘটনার সাক্ষী হয়ে রইল শহর দুর্গাপুরের বাসিন্দারা। দুর্গাপুরের ঘোষাল পরিবারকে আর্থিক অনটনের হাত থেকে বাঁচলেন দুর্গাপুর মহকুমা আদালত।
দুর্গাপুরের বেনাচিতির বাসিন্দা প্রদীপ ঘোষাল(৪৭) পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তিনি জেসিবি মেশিনের ডিলার ছিলেন। কর্মসুত্রে বিভিন্ন জায়গায় তাঁকে যাওয়া আসা করতে হতো। তিনি বেশীর ভাগ সময় নিজের চার চাকা গাড়ি নিয়েই যাতায়াত করতেন। এরকমই ব্যবসায় কাজে ২০১৮ সালের মার্চের ৩ তারিখ তিনি ঝাড়খন্ডের মিহিজামে গেছিলেন। সেদিনই জামতাড়া রোড ধরে যখন দুর্গাপুরে ফিরছিলেন সেই সময় একটি যাত্রী বোঝাই বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রদীপবাবুর গাড়িতে ধাক্কা মারলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
শোকের ছায়া নেমে আসে ঘোষাল পরিবারে। একমাত্র পুত্র প্রদীপবাবুই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। তাঁর একমাত্র ছেলে তখন দ্বাদশ শ্রেণীতে পাঠরত। এমতবস্থায় প্রদীপবাবুর মৃত্যুতে দিশেহারা অবস্থা সদ্য স্বামীহারা স্ত্রী সীমা ঘোষাল পুরো পরিবার নিয়ে তখন অথৈ জলে। সেই সময় দিশাহীন ওই ঘোষাল পরিবার ঘাতক বাসের ইন্সুরেন্স কোম্পানীর বিরুদ্ধে ক্ষতি পূরনের মামলা করেন দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে।
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের ৯ তারিখ বুধবার ঘাতক বাসের ইন্সুইরেন্স কোম্পানীর(United India Insurance company Ltd) বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিলেন মোটর অ্যাক্সিডেন্ট ক্লেম ট্রাইবুনাল, দুর্গাপুর মহকুমা আদালত। মোট ১ কোটি ৪৮ লাখ ২৪ হাজার ৯ শত ৭৪ টাকা ক্ষতিপুরন তৎসহ ৬% হারে সুদ প্রদান করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
প্রসঙ্গতঃ এটি এখনও পর্যন্ত্য দুর্গাপুর মহকুমা আদালত থেকে পাওয়া মোটর দুর্ঘটনায় সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ।
আবেদনকারীর আইনজীবী আয়ুব আনসারী বলেন, “মানুষের জীবনের বিনিময়ে টাকা কখনও পরিপূরক নয়, তবুও স্বজন হারানো পরিবারকে কিছুটা আর্থিক স্বচ্ছলতায় ফিরিয়ে দিতে সাহায্য ক্রল।
এই অর্থ নিশ্চিত উক্ত পরিবার কে কিছুটা আর্থিক স্বচ্ছলতা পেতে সাহায্য করবে। শুধু দুঃখ রয়ে গেল প্রদীপ বাবুর মা সাবিতা রানী ঘোষাল এই ক্ষতি পুরণের খবর টা শুনে যেতে পারলেন না। মামলা চলাকালীন গত ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পুত্র শোকেই মারা যান তিনি।