দুর্গাপুরে গর্তে জীবন্ত পুঁতে দেওয়া হল সদ্যোজাতকে, কন্যা সন্তান হওয়ার অপরাধেই কি?
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ৩১ডিসেম্বরঃ
যতই বলা হোক না কেন নারী পুরুষ সমান সমান, আমাদের সমাজে মেয়েরা যে এখনও অপাংক্তেয় তা প্রতি পদে পদে প্রমান মেলে আমাদের এই সমাজেই। তাই আজও এই সমাজে ভ্রুণ হত্যার মতো অপরাধ এখনও সংগঠিত হয়, আর নয়ত কন্যা সন্তান হওয়ার অপরাধে কখনও জন্ম নেওয়ার পর হয় সেই সন্তানের ঠাঁই হয় আবর্জনার আস্তাকুড়ে।
ডিসেম্বরের কনকনে ঠান্ডায় একটি মাঠের মধ্যে সাত সকালে এক সদ্যোজাতের কান্নার আওয়াজ ভেসে আসে। ওই মাঠেই খেলছিল স্থানীয় ছেলেরা। কান্নার আওয়াজ কোত্থেকে আসছে খোঁজ নিতেই গিয়ে তো হাড় হিম হয়ে যায় সকলের। দেখা যায় মাঠের ভেতর এক হাত গর্তের মধ্যে সদ্যোজাত একটি মেয়ে শিশুকে কেউ বা কারা আধপোঁতা রেখে গেছে। তবে রাখে হরি তো মারে কে। সাথে সাথে ওই শিশুরা গর্ত থেকে ব্যাগবন্দী সদ্যোজাত্তকে উদ্ধার করে। এরপর খোঁজ পড়ে শিশুটি কার। খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায় ওই এলাকারই এক রিক্সাচালক দম্পতির পঞ্চন সন্তান এটি।
স্থানীয়রা জানান, দুর্গাপুরের নিশানহাট বস্তির বাসিন্দা সুনীল রুইদাস চার সন্তানের বাবা। ওই চার সন্তানের মধ্যে দুটি আবার মেয়ে সন্তান। সদ্যোজাতের বাবা বলেন যে বিষয়টির ব্যাপারে তিনি কিছু জানে না, রাতে তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। এদিকে শিশুটির মা বলেন রাত ৩টে ৩০ নাগাদ ওই বাচ্চাটির জন্ম হয়। তিনি ভাবেন যে বাচ্চাটি মৃত জন্মেছে। সেই ভেবে ব্যাগে ভরে বাচ্চাটিকে ওই মাঠে পুঁত্তে রেখে আসেন। অবশ্য বিষয়টি জানাজানি হতেই ওই দম্পতি নিজেদের ভুল স্বীকার করে। কিন্তু ওই সদ্যোজাতকে ফিরিয়ে নিতেও অস্বীকার করে তাঁরা। পরে পুলিশের ভয় দেখানো হলে হুঁশ ফেরে তাদের। ইতিমধ্যেই খবর দেওয়া হয় পুলিসকে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে শিশুটিকে তড়িঘড়ি দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় চিকিৎসার জন্য। ।
এলাকার বাসিন্দা স্বরস্বতী রুইদাস জানান, সুনীল রুইদাসের চার সন্তানের মধ্যে দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। এরপর ফের এক মেয়ে জন্মায়। অভাবের তাড়নায় তাঁরা হয়ত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।