‘করোনা ভাইরাস’ নিয়ে ডিএসপি কর্তৃপক্ষের ‘তুঘলকি’ সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ শ্রমিকমহলে
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান, ২১মার্চঃ
সারা বিশ্ব জুড়ে মারনব্যাধির আকার নিয়েছে করোনা ভাইরাস আর এই ব্যাধির কারনে রীতিমতো আতঙ্কিত সারা বিশ্বের মানুষজন। বাদ যায়নি ভারতবর্ষও। যদিও সরকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তর থেকে সাধারন মানুষকে ‘করোনা ভাইরাস’ নিয়ে আতঙ্কিত হতে বা কোনোরকম গুজবে কান না দেওয়ার জন্য সচেতন করা হচ্ছে সাথে সাধারন মানুষকে সচেতন করতে বিভিন্ন পন্থাও অবলম্বন করা হচ্ছে। সেই একই প্রক্রিয়ায় স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া লিমিটেডের দিল্লির দপ্তর থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি এসে পৌঁছয় দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায়। সেই বিজ্ঞপ্তির বিষয় হল মূলতঃ করোনা ভাইরাস। আর এই বিজ্ঞপ্তির উপর ভিত্তি করে আজ দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় শ্রমিক সংগঠনগুলির সাথে কর্তৃপক্ষের একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে কর্তৃপক্ষ জানান যে, দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার দপ্তরে যারা কাজ করেন তাদের দুটি দলে ভাগ করা হয়েছে। যখন একটি দল দপ্তরের কাজ সামলাবেন তখন অপর দলটি সবেতন ছুটিতে থাকবেন আর যখন অপর দলটি দপ্তরে কাজ করবেন তখন প্রথম দলটি একইভাবে সবেতন ছুটিতে থাকবেন আর এই কাজ আর ছুটির মেয়াদ এক সপ্তাহ অন্তর পরিবর্তন করা হবে। কিন্তু যারা কারখানার দপ্তরে কাজ করেন তারাই এই সুবিধা পাবেন। যারা কারখানার ভেতরে কাজ করেন সেই সমস্ত শ্রমিকরা এই সুবিধা পাবেন না। এদিকে বৈঠকে সেইলের এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি ঘোষণার পরে সেই খবর নিমেষে ছড়িয়ে পরে কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে আর তার জেরে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন শ্রমিকমহল। তাঁরা কর্তৃপক্ষের এ হেন সিদ্ধান্তকে ‘তুঘলকি আচরন’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন।
ওই কারখানায় কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “কারখানার দপ্তরের বিভিন্ন বিভাগে কাজ করেন মাত্র শ’দুয়েক কর্মী। তাদের জন্য করোনা ভাইরাস নিয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হল। অথচ কারখানার ভেতরে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে কাজ করেন প্রায় হাজার দশেক শ্রমিক। কিন্তু তাদের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ অদ্ভূতরকমের উদাসিন। অথচ এ নিয়ে না কর্তৃপক্ষ না শ্রমিক সংগঠনগুলির কারুরই কোনো হেলদোল নেই। তাহলে কারখানায় যারা কাজ করেন তাদের পরিবার আছে, তাদের জীবনের মূল্য আছে আর আমাদের কি পরিবার নেই, আমাদের কি জীবনের মূল্য নেই?”
স্বভাবতই দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা কর্তৃপক্ষের এহেন দ্বিচারিতা মুলক সিদ্ধান্ত নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে প্রবল অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।