বে-আইনি সুদ কারবারীর অত্যাচারে দুর্গাপুরে আত্মঘাতী কলেজ পড়ুয়া

আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ১১ আগস্টঃ
সুদ কারবারীরদের অত্যাচারে আত্মঘাতী কলেজ পড়ুয়ার মৃত্যুকে ঘিরে মঙ্গলবার রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ালো দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীরর টেগোর অ্যাভিন্যুতে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, বাসিন্দা গৌতম দাস তার স্ত্রী ও ছোট ছেলে রোহন দাস(২০) কে নিয়ে ওই এলাকায় বসবাস করেন। রোহন কলেজে প্ড়াশুনা করছিল। গৌতমবাবুর বড় ছেলে রাহুল দাস নিজের ব্যবসার জন্য এক সুদ কারবারীর থেকে চড়া সুদে লক্ষাধিক টাকা ধার করেন। কিন্তু সেই টাকা শোধ করতে না পারায় ওই সুদ কারবারীর লোকজন প্রায়দিনই গৌতমবাবুর বাড়িতে চড়াও হয়ে গালিগালাজ করত। এমনকি রাহুলকে না পেয়ে তাঁর পরিবারকে হুমকিও দিতো সুদ কারবারীর পাঠানো লোকজন বলে অভিযোগ, যেখানে রাহুল তার পরিবারের সাথে থাকতেন না। এই ঘটনার পর থেকে গৌতমবাবুর বড় ছেলে রাহুলও নিখোঁজ হয়ে যায়। এদিকে, মঙ্গলবার গৌতমবাবু তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ির বাইরে যান। তখন বাড়িতে রোহন একাই ছিল। প্রতিবেশিরা জানান, জনা ত্রিশেক লোকজন রোহনদের বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁকে মারধর করতে শুরু করে। পরে এলাকাবাসীদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে তারা এলাকা ছেড়ে চলে যায়। স্থানীয়রা জানান এরপরেই রোহন দুর্গাপুর থানায় গিয়ে বিষয়টি জানায়। থানা থেকে ফেরার কিছু সময় পরেই রোহনকে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান প্রতিবেশীরা। এরপর রোহনের বাবা মাকে সাথে পুলিশকে খবর দেন তারা। পুলিশ এসে রোহনের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। রোহনের ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোহনের বাবার অভিযোগ, টাকা ধার করেছে তার বড় ছেলে। তিনি বা রোহন এর জন্য কোনোভাবেই দায়ী নন। তাহলে সুদ কারবারী তাদের উপর অত্যাচার চালাতো? দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান রোহনের পরিবার।
এলাকাবাসীদের অভিযোগ, জুড়ে চলছে বে-আইনি সুদ কারবারিদের দাপাদাপি। করোনা প্রাক্কালে বহু মানুষের অর্থনৈতিক সমস্যা দেখা দেয়। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সুদ কারবারিরা চড়া সুদে টাকা ধার দিয়ে চলেছে। সময় মত টাকা শোধ দিতে না পারলে চলছে অকথ্য গালাগালি থেকে অত্যাচার। মঙ্গলবার এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থাকলো দুর্গাপুরবাসী।