কপর্দক শূন্য, পরিবারও অনটনে তাই পায়ে হেঁটেই দিল্লি পাড়ি, কিন্তু পথ দুর্ঘটনার জেরে ঠাঁই হল পানাগড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান, ২৩এপ্রিলঃ
পেশায় চাকুরীজীবী, দিল্লি নিবাসী সমীর হালদার মাস খানেক আগে কলকাতায় আসেন কোনো কাজে। আচমকা লকডাউনের কারনে কলকাতাতেই আটকে পড়েন ক্যাটারিং সংস্থায় কর্মরত ওই ব্যাক্তি। ভেবেছিলেন খুন তাড়াতাড়ি হয়ত পরিশ্তিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু তখন তিনি ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি যে একবার লকডাউনের সময়সীমা পেরিয়ে আবার দ্বিতীয় দফায় লকডাউন শুরু হয়ে যাবে। ফলে বেজায় সমস্যার পড়েছেন ওই ব্যাক্তি। এদিকে সঙ্গে যেটুকু টাকাকড়ি ছিল তাও প্রায় সেশ। ওদিকে দিল্লিতে তাঁর পরিবারের অবস্থাও অসহায়। সব মিলিয়ে নিজের পরিবারের কাছে যেভাবেই হোক প্রায় ১৬০০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটেই পাড়ি দেবেন বলে মনস্থির করেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। বেরিয়েও পড়েন দিল্লির উদ্দ্যেশ্যে। জাতীয় সড়ক ধরে পায়ে হেঁটে যেওয়ার সময় হুগলি ও পূর্ব বর্ধমানের মাঝে একটি বাইক তাঁকে পেছন থেকে ধাক্কা মারে। ওই দুর্ঘটনায় মাথায় চোট পান সমীরবাবু। এদিকে সেই চোট চিকিৎসার জন্য আথে নেই একটি টাকাও। তবে পথ চলতি কয়েকজন সহৃদয় ব্যাক্তি তাঁর চিকিৎসার জন্য কিছু টাকার বন্দোবস্তও করে দেন। কিন্তু অমানবিক কয়েকজন চিকিৎসক সমীরবাবুর চিকিৎসা করতে সাফ মানা করে দেন। বাশ্য হয়ে আহত অবস্থাতেই ফের হাঁটা শুরু করেন মরিয়া ওই ব্যাক্তি। পথ চলতে চলতে তিনি এসে পৌঁছন পানাগরে। ক্লান্ত শরীরে একটু জিরিয়ে নেওয়ার জন্য সমীরবাবু পানাগড়ে হাইওয়ের ধারে বস্ন। তাঁকে দেখে সন্দেহ হওয়ায় স্থানীয় এক বাসিন্দা গুরমেজ সিং তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সব জানতে পারেন। এরপর ওই ব্যাক্তি কাঁকসা থানায় ফোন করে জানান বিষয়?টি। কাঁকসা থানা থেকে একজন সিভিক ভলান্টিয়ারকে পাঠানো হয় সমীরবাবুর কাছে। ওই সিভিক ভলান্টিয়ার নিজের বাইকে করে সমীরবাবুকে পানাগড় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যেকেন্দ্রে নিয়ে ভর্তি করে দেন। পুলিশ সুত্রে খবর বর্তমানে সিল্ল নবাসী ওই ব্যাক্তি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই চিকিৎসার মধ্যে থাকবেন যতদিন না ইনি সুস্থ হয়ে উঠছেন।