দুর্গাপুরে যুবকের রহস্য মৃত্যু, আত্মহত্যা নাকি রাজনৈতিক হত্যা?

আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ১৫ সেপ্টেম্বরঃ
সোমবার রাত্রি ন টা নাগাদ ঘর থেকে বেড়িয়ে আর ঘরে ফেরেনি দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার অন্তর্গত নডিহার বাসিন্দা মানস ভদ্র (২৮)। মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ মানসের নিথর দেহ পুলিশ বাড়ী থেকে একটু দূরে থাকা সেচখাল থেকে উদ্ধার করে। অস্বাভাবিক এই মৃত্যুর ঘটনায় এখন মানসের পরিবারের লোকজন খুনের অভিযোগ করছেন। সেই কথা পুলিশকেও জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মানসের পরিবার। বুধবার সকালে কোকওভেন থানার পুলিশ সেচ খালের সামনে থেকে মানসের মোবাইল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এখন এই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই পুলিশ তদন্তকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে।
পুলিশ ও মানসের পরিবার সুত্রে জানা গিয়েছে, দিন পনেরো আগে মানস ভদ্রের বাড়ীতে জনা কয়েক ছেলে এসে তাকে দেখা করার জন্য বলে যায়। ঘরে ফেরার পর মানস এদের একজনকে ফোন করলে সে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। মানসের মায়ের অভিযোগ, ছেলেকে খুন করা করা হয়েছে। পাশাপাশি মানসের মা ও মেসোর অভিযোগ, একটি মেয়ের সাথে ফোন মারফত সম্পর্ক তৈরী হয় মানসের।সেই মহিলা তাকে নানাভাবে মানসিক চাপ দিচ্ছিল। হতে পারে এই কারণে মানসের এই মৃত্যু। মানসের শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে বলে দাবী পরিবারের। গোটা ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরী হয়েছে শহর দুর্গাপুরে।
এদিকে মানসের বাবার অভিযোগ,স্থানীয় ৪৩নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথেই থাকতো মানস। যতদিন চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলে ছিলেন ততদিন মানসও তৃণমূলে ছিল। কিন্তু গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী বলে পরিচিত নগর নিগমের ৪৩নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়াতে মানসও তখন বিজেপিতে চলে আসে। মৃত মানস ভদ্রকে দলীয় কর্মী বলে দাবী করে দুর্গাপুর নগর নিগমের ৪৩নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, যেভাবে রাজ্যে বিরোধীদের ওপর অত্যাচার চলছে তাতে করে এই ঘটনায় পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।
অন্যদিকে তিন নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি শিপুল সাহা বলেন, মৃত যুবক মানস ভদ্র তৃণমূলেই ছিল এখনও সে তৃণমূল কর্মী।পুলিশ তদন্ত করুক,কিন্তু বিজেপি যে অভিযোগ আনছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় অন্য কোনো কারণ লুকিয়ে রয়েছে পুলিশ সেটা তদন্ত করুক।
তবে মানসের মৃত্যু আত্মহত্যা নাকি রাজনৈতিক খুন সে বিষয়ে তদন্ত করছে কোকওভেন থানার পুলিশ ।