লকডাউন উপেক্ষা করার অভিযোগে আসানসোল দুর্গাপুরে আটক প্রায় ২৪২
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান (আসানসোল-দুর্গাপুর), ২৩জুলাইঃ
রাজ্যে ক্রমশ বেড়েই চলেছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। স্বাস্থ্যদপ্তরের সুত্র অনুযায়ী ইতিমধ্যে বঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা গতকাল পর্যন্ত্য ছিল ৪৯, ৩২১। এর মধ্যে গতকাল ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২২৯১ জন আএ মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের। উত্তোরত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে এই সংখ্যা। এইভয়ানক পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে করোনা মোকাবিলা করতে ফের রাজ্যের তরফে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে আপাততঃ সব দিক বিবেচনা করে সপ্তাহে দুদিন করে এই লকডাউন চলবে। আজ ছিল এই দফার প্রথম লকডাউনের দিন। সাধারন মানুষ যাতে লকডাউন অমান্য না করে সেই কারনে আজ সকাল থেকেই পুলিশ প্রশাসনকে বেশ কড়া হাতে তা মোকাবিলা করতে দেখা যায়।
একই চিত্র ধরা পড়ল আসানসোল দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলেও। দুর্গাপুর শহরের চিত্র দেখে মনে হচ্ছিল যে কোনো রাজনৈতিক দলের ডাকা বনধের প্রভাব পড়েছে কিনবগা বলা যেতে পারে শহরে যেন কার্ফূ জারি করা হয়েহে। সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত ছিল একেবারে সুনশান। বাজার হাট থেকে শুরু করে দোকানপাট ছিল পুরোপুরি বন্ধ। রাস্তাঘাটে সেভাবে লোকজনেরও দেখা মেলেনি। দুর্গাপুরের বেনাচিতি বাজার কিংবা চণ্ডিদাস বাজারেও লকডাউনের প্রভাব পুরোপুরি পরতে দেখা যায়। তবে লকডাউন যাতে কেউ অমান্য না করতে পারে তার জন্য সকাল থেকে পুলিশ প্রশাসনকে সক্রিয় ভুমিকা নিতে দেখা গেছে। তবে এরই মধ্যে কিছু উৎসাহী মানুষজন লকডাউনকে উপেক্ষা করেই বেরিয়ে পড়েন বাড়ির বাইরে। কোথাও দেখা যায় জরুরী কাজ ছাড়াই নানা বাহানায় বাইক নিয়ে বেরিয়ে পরতে আবার কারুর মধ্যে ছিল আইন না মানার প্রবনতা। আর সেই কারনেই দুর্গাপুর আসানসোল পুলিশ কমিশনারেটের আওতাধিন বিভিন থানা থেকে লকডাউন অমান্যকারীদের আটক করতে দেখা যায়। সারাদিনের শেষে আটকের যে পরিসংখ্যান পাঈওয়া গেছে পুলিশ সুত্র অনুযায়ী তা হল দুর্গাপুর পুলিশের আওতাধিন কাঁকসা থানায় আটক করা হয় ৪১জনকে, নিউটাউনশিপ থানায় ১৯ জনকে, কোকওভেন থানায় ২৭ জনকে, পান্ডবেশ্বর থানায় ৫ জনকে, দুর্গাপুর থানায় ২৪ জনকে, আসানসোল উত্তর থানায় ১০ জন, আসানসোল দক্ষিন থানায় ৩৮ জনকে, রানীগঞ্জ থানায় ২২ জনকে, কুলটি থানায় ২৩ জনকে আটক করা হয়। তবে অন্ডাল ও বুদবুদ থানায় কোনো আটকের খবর নেই। পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, এদের মধ্যে কিছু জনকে বুঝিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় আর কিছু জনের অপরাধ এতটাই ছিল যে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয় পুলিশ। সব মিলিয়ে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটে লকডাউন উপেক্ষা করার অভিযোগে মোট ২৪২ জনকে আটক করে পুলিশ।
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি(পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা বলেন যে, “করোনা মোকাবিলা করতে বাধ্য হয়েই ফের রাজ্যে ল্কডাউন করা হয়েছে সরকারের তরফে। তাই এই শহরে যাতে সকলে লকডাউন সঠিকভাবে মেনে চলেন তার জন্য আমরা সচেষ্ট ছিলাম। শহরের বেশিরভাগ মানুষই লকডাউন মেনে চলেছিলেন। তবে কিছু মানুষ এই লকডাউনকে উপেক্ষা করার চেষ্টা করেছিলেন। আমরা তাদের আটক করলেও তাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছি যে কেন লকডাউন মেনে চলার দরকার। তার জন্য আমাদের একসমই লাঠির প্রয়োজন পড়েনি। দুর্গাপুর শহরে প্রায় ১০০ এর কাছাকাছি মানুষকে আজ আটক করা হলে আশা রাখছি আগামীদিনে এই সংখ্যাটি একেবারে শূণ্যতে এনে দাঁড় করাতে পারব।”