এক একজন যেন কেউটের বাচ্চা ধরতে গেলেই ছোবল খেতে হবে, উচ্ছেদ প্রসঙ্গে মন্তব্য বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যানের
আমার কথা, বর্ধমান, ২৭ জুনঃ
বর্ধমানে একের পর এক বেআইনি কাজকর্ম চলছে। ফুটপাত দখল থেকে পুকুর ভরাট কিংবা বেআইনি নির্মাণ সবক্ষেত্রেই কারো না কারো মদত থাকছে। এক একজন যেন কেউটের বাচ্ছা। ধরতে গেলেই ছোবল খেতে হবে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো সাতদিনের মধ্যে সমাধানের জন্য রূপরেখা তৈরি করার আশ্বাস দিলেন বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ সরকার। বর্ধমানে একটা স্কুলের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে তিনি নাম না করে বলেন রাজনৈতিক দলগুলি এর দায় এড়িয়ে যেতে পারে না।
পরেশ সরকার বলেন, ‘ বালি তোলে কারা। নিউজে দেখি পুলিশ খুব সক্রিয় বালি চোরেদের ধরছে।অথচ দেখাতে পারি কিভাবে নৌকা করে বালি তোলা হচ্ছে। মেসিনে করে বালি কাটা চলছে। এইভাবে যদি মাস ছয়েক চলতে থাকে তাহলে মাটি থেকে আর জল পাওয়া যাবে না। স্বাভাবিকভাবে প্রতিবন্ধকতা সব জায়গায় আছে।বে আইনি নির্মাণ চলছে। এমনিতে একজন সাধারণ মানুষ তিনতলাকে চারতলা করতে পারে না। হয় সে টাকার জন্য পারে কিংবা অন্য কারো মদতের জন্য পারে। পুকুর ভরাট আজ লাভজনক ব্যবসা। পাঁচ থেকে ছয় কাটার একটা পুকুর ভরাট করতে পারলে ভালো লাভ। শহরে এমন কোন জায়গা নেই যেখানে কাঠা প্রতি 25-26 লক্ষ টাকা পাওয়া যাবে। ফলে একটা ডোবা কোনরকমে ভরাট করতে পারলে কোটি টাকার ব্যবসা হয়ে যাবে। অথচ ডোবা থেকে কোন রির্টান নেই। ফলে একটা শ্রেণি আছে যাদের কাছে ভিড় জমছে।তারা বেআইনি নির্মাণ করিয়ে দিতে পারে।তারা সরকারি জমি দখল করিয়ে দিতে পারে। ‘
বর্ধমানের যানজটের প্রসঙ্গ তুলে ধরে হকারদের ফুটপাথ দখলের বিরুদ্ধে তোপ দেগে চেয়ারম্যান বলেন, ‘আজ বর্ধমান শহরের রাস্তাঘাট হাঁটার অযোগ্য হয়ে উঠেছে। শহরে যানজটের কারণে মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। শহরে কত টোটো চলবে।কাউকে ধরলেই সে বলছে পেটে লাথি মারছে। বর্ধমান শহরের বিসি রোডে পাথর দিয়ে ফুটপাথ তৈরি করা হলো। সেখানে লাইন দিয়ে লোক বসে পড়েছে। সেখানে রান্না হচ্ছে। উনুন বসাচ্ছে, খাওয়া দাওয়া চলছে। বিসিরোডের রাজবাড়ি পর্যন্ত 42 লক্ষ টাকা দিয়ে রেলিং তৈরি করে দেওয়া হলো। কারণ রেলিং এর একপাশে ফুটপাথের ব্যবসায়ীরা থাকবে অন্যদিকে ফাঁকা থাকবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে দুই জায়গাই আজ দখল হয়ে গেছে। এগুলো তো কারও মদত না থাকলে হতে পারে না। রাজনৈতিক দলগুলি তো এর দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। তা না হলে জেলখানা মোড় থেকে ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত দুপাশে হকার বসে গেছে। এরা কারা। এরা বর্ধমান শহরের লোকই নয়। টাকার বিনিময়ে বাইরে থেকে এনে এদেরকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এই হকার বসার জন্য গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। ধরতে গেলে এক একজন কেউটের বাচ্ছা। আমার পিছনে অমুক কাকা বা দাদা আছে।সবার পিছনে কেউ না কেউ আছে আর আমাদের পিছনে কেউ নেই। ধরতে গেলেই ছোবল খেতে হবে। তবে যে সব অন্যায় হচ্ছে সাতদিনের মধ্যে একটা রূপরেখা তৈরি করে সমাধানের চেষ্টা করবো।’