দুর্গাপুরে সুপ্রিমোর বৈঠক কি লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি নাকি গোষ্ঠীকোন্দল মেটানোর চেষ্টা?
আমার কথা, দুর্গাপুর, ২৬ ফেব্রুয়ারী:
রাজ্যে শিক্ষা, রেশন, সহ একাধিক দুর্নীতি নিয়ে জর্জরিত তৃণমূল কংগ্রেস। বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্যের একাধিক নেতা, মন্ত্রী আমলাদের যখন তখন ইডি, সিবিআই তলব করছে। সামনেই লোকসভা নির্বাচন, তাতে এই সকল ঘটনা কোনো প্রভাব পড়বে? এদিকে গোদের ওপর বিষ ফোঁড়ার মতো সন্দেশখালি ইস্যুতে হাত পাকাচ্ছে বিরোধীরা। এরই মধ্যে লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণা না হলেও চারিদিকে বেশ একটা সাজো সাজো রব পড়ে গেছে। জেলা সফরে বেরিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই দুর্গাপুর ছুঁয়ে ঘুরে গেছেন বীরভূম। আবারও দুর্গাপুরে এলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আজ সোমবার বিকেল ৫টা ১০ নাগাদ বিশেষ বিমানে অন্ডাল বিমানবন্দরে নামেন তিনি। তারপর সড়কপথে এসে পৌঁছোন দুর্গাপুরের সার্কিট হাউসে। এখানে মমতা বন্দোপাধ্যায় পৌঁছেই জেলার দুই মন্ত্রী সহ বিধায়ক ও দলীয় নেতাদের সাথে এক প্রস্থও বৈঠকও সেড়ে ফেলেন তিনি। বৈঠকের শেষে একে একে সকলে সার্কিট হাউসের বাইরে বেরিয়ে এলেও কি নিয়ে এই বিশেষ বৈঠক তার উপর আলোকপাত করতে রাজী হলেন না কেউই। ফলে এই বৈঠককে ঘিরে নানা মতামত দানা বাঁধতে শুরু করেছে শিল্পাঞ্চলের রাজনৈতিক মহলে। তবে সুত্রের খবর, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় দলের গলার কাঁটা হল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। গত লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুটি কেন্দ্রই হারিয়েছিল শাসকদল। আর বার বার তার পিছনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে একটি কারন তা আলোচনায় উঠে আসে বার বার৷ এদিকে লোকসভার দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই আসানসোল কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়ে গিয়েছে দলের পক্ষ থেকে। সেটি একটি অস্ত চ্যালেঞ্জ দলের কাছে। কারনএই জেলায় দুটি শিবিরে ভাগ হয়ে রয়েছে জেলা নেতৃত্ব। একটি শিবির “মলয়-ঘনিষ্ঠ”, আবার আরেক শিবির “মলয়-বিরোধী”। ২০২৪ এর লোকসভা ভোটে যাতে ২০১৯ এর ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে তাই কি দলের সুপ্রিমো গোষ্ঠীকোন্দল মেটাতে তড়িঘড়ি জেলা নেতৃত্বকে ডেকে সেই কোন্দল মিটানোর চেষ্টা করলেন? সম্পন্নতে একে একে আসেন মলয় ঘটক, বিধান উপাধ্যায়, প্রদীপ মজুমদার, অভিজিৎ ঘটক, তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, উজ্জ্বল চ্যাটার্জী, নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, হরেরাম সিং বিশ্বনাথ পাড়িয়াল, জেলা সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউরি, ভি শিবদাসান দাসু প্রমুখ। সুত্রের খবর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিধায়ক, জেলা সভাপতি, শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি, জেলা সভাধিপতি প্রমুখদের সাথে এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন বলেই বিবেচিত হচ্ছে। তবে মিনিট পনেরোর এই বৈঠকের পর সেভাবে কোন নেতৃত্বই মুখ খুলতে রাজি হননি। কেবলমাত্র জেলা সভাপতি নরেন চক্রবর্তী বলেন, দিদি বার্তা দিয়েছেন লড়াই করে জিততে হবে। প্রসঙ্গতঃ গত শুক্রবার শত্রুঘ্ন সিনহা পত্নী পুনম সিনহা আসেন আসানসোলে আর সবার আগে গিয়ে দেখা করেন পুরসভার মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের সাথে। আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে তাহলে বিধানের রাগ ভাঙাতেই কি দেখা করলেন সাংসদ পত্নী? গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটিয়ে আসন্ন নির্বাচনে একসাথে লড়াই করতে সুপ্রিমোর নির্দেশেই কি এই সাক্ষাত? যদিও এটিকে কেবলমাত্র সৌজন্য সাক্ষাত বলছেন বিধান উপাধ্যায় থেকে শুরু করে পুনম সিনহা।