কোভিড রুখতে আয়ের একটি অংশ ব্যয় করে করোনা যুদ্ধে সামিল দুর্গাপুরের দম্পতি
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(লাউদোহা), ২৩মেঃ
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ-এ বেসামাল দেশ। বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা। সংক্রমনের শৃঙ্খল ভাঙতে বিভিন্ন রাজ্যে জারি হয়েছে আংশিক লকডাউন। করোনা রুখতে সরকারি পদক্ষেপের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারী ক্লাব ,স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, প্রতিষ্ঠান সামিল হয়েছে লড়াইয়ে। শুভ চক্রবর্তী, রমা চক্রবর্তী এরকমই দুটি নাম। সম্পর্কে তারা স্বামী-স্ত্রী। দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের ইচ্ছাপুর পঞ্চায়েতের জব্বরপল্লী-র বাসিন্দা। প্রতিদিন স্কুটিতে করে বেরিয়ে পড়েন তারা। পান্ডবেশ্বর, লাউদোহা, অন্ডাল এমনকি দুর্গাপুরেও পৌঁছে যান তাঁরা। সরকারী অফিস, ভবন, রেলস্টেশন এমনকি রক্তদান শিবির, স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবিরেও দেখা যায় এই দম্পতিকে। পিঠে জীবাণুমুক্ত করার স্প্রে নিয়ে নেমে পড়েন জায়গাগুলোকে জীবাণুমুক্ত করার কাজে। বিনামূল্যে করছেন মাস্ক বিতরণ।
শুভ বাবু জানান সমাজ থেকে আমরা অনেক কিছু পাই, বিনিময়ে উচিত সমাজকেও কিছু ফিরিয়ে দেওয়া। সেই মানসিকতা থেকে- ই কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল হয়েছি আমরা। মহারাষ্ট্রে কাপড় ও ধূপের ব্যবসা করতেন শুভ বাবু। ব্যবসায় আমদানি ছিল ভালই। গতবছর লকডাউন এর কারণে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায় আর ফিরে আসেন লাউদোহার জব্বর পল্লী-র নিজের বাড়িতে। এখানে এসে শুরু করেন ধূপ আর কাপড়ের ব্যবসা। কিছুদিন সেই ব্যবসা চলার পর ফের লকডাউন এর কারণে তাও বন্ধ হয়ে যায়। রুটি রুজির জন্য বিকল্প হিসেবে মাস্ক, স্যানিটাইজার বিক্রির কাজ শুরু করেন। এই ব্যবসায় প্রচুর লাভ বলে জানান শুভ বাবু। শুভ বাবু জানান লাভের একটা অংশ কোভিডের বিরুদ্ধে যুদ্ধে খরচ করার সিদ্ধান্ত নিই আমরা দুজনে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্যানিটাইজ ও মাস্ক বিলি করা শুরু করি বিভিন্ন এলাকায়।
এই কাজে শুভ বাবুর সহযোদ্ধা তাঁর স্ত্রী রমা চক্রবর্তী। রমাদেবি জানান স্বামীর এই মহৎ কাজে সঙ্গী হতে পেরে আমি গর্বিত। বলেন বাড়িতে রয়েছে তাদের ১৩ বছরের ছেলে। সকাল-সকাল তাঁর জন্য রান্না ও খাবারের ব্যবস্থা করে আমরা দুজন বেরিয়ে পড়ি স্কুটি নিয়ে। প্রথমে আমরা নিজেরাই বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে যেতাম স্যানিটাইজ করার জন্য। এখন অনেক জায়গা থেকে ফোন আসে। স্যানিটাইজ করার জন্য আমরা পৌঁছে যাই সেই সব জায়গায়। বলেন আসা যাওয়ার পথে লক্ষ্য করি অনেকেই মুখ খোলা অবস্থায় বাইরে ঘুরছেন। আমরা তাদেরকে বিনামূল্যে মাস্ক দিয়ে মাস্ক পড়ার প্রয়োজনীয়তা বোঝাই। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো ও সমাজকে জীবানু মুক্ত করা আমাদের লক্ষ্য। যেদিন লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো সেদিন আমাদের উদ্দেশ্য সফল হবে বলে জানান দম্পতি।