প্রদীপের নিচে অন্ধকার, অভিজাত এলাকা সিটিসেন্টারে বাস স্ট্যান্ড মারনফাঁদ
আমার কথা, দুর্গাপুর, ২৭ আগস্ট:
এক সময় স্মার্ট সিটির দৌড়ে নাম লেখানোর লক্ষ্যে শহর দুর্গাপুরের একি দশা। একটি সামান্য বাস স্ট্যান্ড চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে এই শহরের সাধারন পরিষেবার কি জরাজীর্ণ অবস্থা। দুর্গাপুরের ২২ নং ওয়ার্ডের মৌলানা আজাদ বাস স্ট্যান্ডটি যে কোনো মুহূর্তে হুড়মুড়িয়ে ভেঙ্গে পড়তে পারে। ইতিমধ্যেই এই বাস স্ট্যান্ডের শেডের অনেকাংশ ভেঙ্গেও পরেছে। শুধু তাই নয়, এটি রীতিমতো মারন ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শেডটি টিনের তৈরী আর এই টিনের একটি অংশ মারাত্মক ভাবে ঝুলে রয়েছে, যা যে কোনো মুহূর্তে কোনো প্রতীক্ষারত বাস যাত্রীর মাথার উপর ভেঙ্গে পড়ে বড়সড় দুর্ঘটনা এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে। এই বাস স্ট্যান্ডের শেডটির এমন দুর্দশা যে ঝড় বৃষ্টি বা রোদের হাত থেকে বাঁচতে এই শেডের তলায় আশ্রয় নেবে কেউ তারও উপায় নেই। পাশাপাশি আরো বলে রাখা ভালো, এই বাস স্ট্যান্ডটিতে বহু বছর ধরে এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যাক্তি আশ্রয় নিয়েছে। দিন রাত এই বাসস্ট্যান্ডেই থাকে অর্থাৎ বলতে গেলে এটিই তার বাড়ি-ঘর। এমতবস্থায় বলতে গেলে প্রাণ হাতেই তার বসবাস। সব দেখেও সে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর এই বাস স্ট্যান্ডে বসবাস করছে কারন সে মানসিক ভারসাম্যহীন, তাই বিপদের কোনো কিছুই তাকে স্পর্শ করে না।
তবে বাইরে থেকে এই শেডটির ভয়াবহ রূপ বোঝার কোনো উপায় নেই। কারন এই শেডের তিনদিক সুদৃশ্য রঙীন বিজ্ঞাপনের মোড়কে মুড়ে রাখা আছে। আর এই বিজ্ঞাপন থেকে বেশ মোটা টাকাও আয় হয়।
যদিও এ বিষয়ে এই ২২ নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন পুরমাতা তথা বর্তমান পুরপ্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা মুখার্জি বলেন শহরের অনেকগুলো বাস স্ট্যান্ডের লিস্ট করে এডিডিতে জমা দিয়েছি মেরামতের জন্য, কিন্তু যতক্ষণ না কাজের জন্য তাদের থেকে অনুমতি(NOC) পাচ্ছি ততক্ষণ কাজটা করতে পারছি না। তবে মৌলানা আজাদের ওই বাস স্ট্যান্ডের শেডটি জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের ব্যবস্থা করছি।
যদিও ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই শেডের যা হাল হয়েছে তা একদিনে হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষয় হতে হতে এই পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। এতদিন কি প্রশাসন ঘুমোচ্ছিল? সামান্য একটি শেড যা এই বিজ্ঞাপনের টাকার একাংশ দিয়েই মেরামত করে দেওয়া যেতো। এভাবে দিনের পর দিন ওই মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষটিকে বা প্রতীক্ষারত বাসযাত্রীদের প্রাণ হাতে করে দাঁড়াতে হতো না।