রাতভর বৃষ্টিপাতে ডুবল দুর্গাপুর, নজিরবিহীন ঘটনা শহরের বুকে ভাসল লাইফবোট
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ১৮সেপ্টেম্বরঃ
গত কয়েক বছর ধরে শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরের এটি একটি অতি পরিচিত ছবি যা নিয়ে ভুগছেন কিছু ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। একটি ভারী বৃষ্টিপাত হলেই এলাকা জলমগ্ন হয়ে পরে, সাথে বাড়ি ঘরের ভেতরেও ঢুকে পড়ে সেই জল। এ বছরও তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাতভর টানা বৃষ্টিপাতের জেরে পুনরায় জলের তলায় ডুবল শহরের কিয়দাংশ। টানা বৃষ্টিপাতের জেরে শহরের বেশ কিছু নিচু জায়গা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। সমস্ত নালা জলে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে, ডুবেছে বহু ঘরবাড়ি।
দুর্গাপুরের মেনগেট এলাকা প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও একই রকমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। মেনগেট এলাকা সংলগ্ন তামলা নালা জলে ভরে তা উপছে ঢুকে পড়েছে আশেপাশের বাড়ি ঘরে। ফলে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ। তবে শুধু তামলা এলাকা নয়, দুর্গাপুরের অধিকাংশ এলাকাই জলের তলায়। যদিও এটা নতুন কিছু নেই তবে এ বছরের সব থেকে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল সারা রাতের এই বৃষ্টির জল দাঁড়িয়ে যেতে দেখে গেল দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর বি জোনের নিউটন রোডে। ওই এলাকার ২নং স্ট্রিটের কোয়ার্টারগুলিতে জল ঢুকে খুবই বাজে পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। ঘরের সমস্ত জিনিসপত্র সহ আসবাবপত্র জলে ভাসছে। সারা রাত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।
ওই এলাকার বাসিন্দা তীর্থ কুমার মন্ডল জানান, “কাল সারা রাতের বৃষ্টিতে যেভাবে ঘরের ভেতর জল ঢুকে পড়েছে তাতে আমরা স্বপরিবার আতঙ্কিত ছিলেম। তাই ঘর ছেড়ে রাতভর বাইরে রয়েছি আমরা। এখনও ঘরে ঢুকে দেখতেও পারিনি কি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।”
নজিরবিহীন ছবি এবারে দুর্গাপুরের বুকে ভাসতে দেখা গেল লাইফবোট যা প্রশাসনের তরফে তামলা এলাকায় নামামো হয়েছে উদ্ধারকাজের জন্য। পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে দুর্গতদের দিকে। জলে আটকে পরা মানুষদের উদ্ধার করা থেকে শুরু করে পীড়িত মানুষদের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়া সবেতেই প্রশাসনকে সদর্থক ভূমিকা নিতে দেখা গেছে। শিল্পাঞ্চলের বয়োজ্যষ্ঠদের বলতে শোনা গেল ১৯৭৮ সালের বন্যায় যেখানে ডিএসপি কারখানা সহ ইস্পাত নগরীর কিছু জায়গায় জল ঢুকে গেছিল, যা ছিল গতকাল পর্যন্ত্য নজিরবিহীন ঘটনা। কিন্তু গত রাতের বৃষ্টির কারনে আরো বড় নজিরবিহীন ঘটনা এটাই যে শহরের বুকে ভাসতে দেখা গেল লাইফবোট।