তৃণমূলের শ্রমিক নেতার ‘তোলা’র টাকা না দেওয়ায় কাজ হারালেন ডিএসপির ঠিকাকর্মী
আমার কথা, দুর্গাপুর, ২৮ জুনঃ
দুর্গাপুরের সব কারখানাগুলিতে চাঁদা তোলার জুলুম চলছে। এমনই অভিযোগ করে সেই চাঁদা তোলা বন্ধ করার কড়া নির্দেশ দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। একদিকে যখন মুখ্যমন্ত্রী কারখানা গুলি থেকে চাঁদা তোলা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন তখন অন্যদিকে সেই ঘটনারই পুনকরাবৃত্তির অভিযোগ উঠল শাসকদলের এক শ্রমিক নেতার অনুগামীদের বিরুদ্ধে। আর চাঁদা দিতে অস্বীকার করার কারনে কাজ হারালেন এক বর্ষীয়ান ঠিকা শ্রমিক। ঘটনাটি দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার। যদিও ওই শ্রমিককে কাজে ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছেন আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি।
দুর্গাপুরের ১২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সেখ আজবাহার কাজ করেন দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় এক ঠিকা সংস্থার অধীনে কোকওভেন বিভাগে। আর মাত্র ৭ মাস বাকি রয়েছে ওই ঠিকাকর্মীর অবসর গ্রহনের। কিন্তু এর মধ্যে কাজ হারা হলেন তিনি, সৌজন্যে শাসকদলের এক শ্রমিকনেতার অনুগামীরা। সেখা আজবাহারের অভিযোগ, শ্রমিক নেতা প্রভাত চ্যাটার্জির অনুগামী সেখ উরুল, আবুরা অ্যাম্বুলেন্স কেনার জন্য এক কালীন ৩০০০ টাকা ও মাসে মাসে ১০০ টাকা করে দিতে হএ। কিন্তু সেখা আজবাহার তা দিতে অস্বীকার করলে তাঁর কাজ চলে যায়। এরপর ওই ঠিকাকর্মী শ্রমিক নেতা দীপংকর লাহার শরণাপন্ন হন। অনুরোধ করেন যেন তিনি ওনার কাজটা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। দীপঙ্কর লাহা ওই ঠিকা সংস্থাকে সেখা আজবাহারকে কাজে ফেরানীওর কথা বলেন, কিন্তু ওই ঠিকা সংস্থা পরিষ্কার জানিয়ে দেয় যে যাদের নির্দেশে এই কাজ গেছে তাঁরা যতক্ষণ না নির্দেশ দিচ্ছেন ততক্ষণ ওই শ্রমিককে কাজে ফেরাতে পারবেন না।
এরপরেই বিষয়টি আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটকের কানে পৌঁছোয়। অভিজিতবাবু বলেন, “আমাই সুনেছি বিষয়টি। দীপংকর লাহা আমাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি শোনা মাত্রই আমি ঐ ঠিকা সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছি সেখা আজবাহারকে কাজে ফিরিয়ে নিয়ে। আর সেখা আজবাহারকে বলা হয়েছে যে নেতা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাঁর নামে থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান, তারপর অভিযুক্ত ওই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, “শুধু দুর্গাপুর কেন সারা রাজ্য জুড়েই এই তোলাবাজির সংস্কৃতি চলছে। দলের সুপ্রিমো যতই কড়া নির্দেশ দিন না কেন তাঁকে যে কেউ তোয়াক্কা করে না দুর্গাপুরের এই ঘটনা তারই প্রমান।”