লজ্জা কার? বোনের খুনের সুবিচার চাইতে সাইকেলে রাজভবন পাড়ি দাদার
আমার কথা, দুর্গাপুর, ১৭ জুলাই:
বোনের খুনির শাস্তি চেয়ে এবার সাইকেল করে দুর্গাপুর থেকে রাজ্যপালের কাছে দুর্গাপুরের প্রসেনজিত স্বর্ণকার। পুলিশ প্রশাসনের কাছে বিচার চেয়েও,আজও অধরা বোনের স্বামী, সন্দেহভাজনের নাম থানায় দিলেও সেও বুক ফুলিয়ে ঘুরছে শহরে।আজও খোঁজ পায়নি ভাগ্নে- ভাগ্নির।
প্রসেনজিৎ কি সুবিচার পাবে না? বছর দুয়েক আগে বোন খুন হয়েছে, খোঁজ মেলেনি দুই ভাগ্নে ভাগ্নিরও। প্রশাসনের সব স্তর থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সবার কাছে সুবিচারের আর্জি জানিয়েছে পরিবার। আজও অধরা বোনের স্বামী, খোঁজ মেলেনি ভাগ্নে ভাগ্নির। সুবিচারের আশায় এবার আজ দুর্গাপুর থেকে রাজ্যপালের কাছে সাইকেল চেপে রওনা দিলো প্রসেনজিৎ স্বর্ণকার। প্রায় বছর দুয়েক আগে দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার অন্তর্গত অঙ্গদপুর এলাকায় উমা খাতুনের বাড়ি থেকে পচা গলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ, ঘটনার আগের দিন থেকে মৃতা উমা খাতুনের স্বামী পলাতক,পড়শিরা সেইদিন ফোন করে উমার পরিবারকে জানায় এই দুর্ঘটনার কথা।
প্রেমের কারনে বাবা মায়ের অমতেই দুর্গাপুরের রফিক আলমকে বিয়ে করেন উমা। দুই শিশু সন্তান ছিল উমার, আজও খোঁজ মেলেনি এই দুই শিশুর। পরিবারের সন্দেহ অঙ্গদপুর এলাকার দিদির বাড়ির এক পড়শী ছোটে লাল ও তার স্ত্রী সব জানতো এই ব্যাপারে, কিন্তু পুলিশকে জানানোর পর ঐ দু একবার ডাকাডাকির পর কোকওভেন থানার পুলিশ আর গা করেনি। এদেরকে চাপ দিয়ে সব সত্যি বের করা যেতো। এমনকি উমার স্বামী কোথায় সেটা জানতেও পুলিশের গড়িমসি ছিল অনেক। মহকুমা প্রশাসন থেকে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের সর্বোচ্চ স্তর সব জায়গায় জানিয়েও কাজের কাজ কিছু হয়নি। এরপর আদালত। পরে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সুবিচার চেয়ে লিখিত আর্জি জানান উমার পরিবার। কিন্তু কোথায় কি??? আজও অধরা উমার স্বামী রফিক আলম, বুক ফুলিয়ে ঘুরছে ছোটে লাল যে কিনা পরিবারের সন্দেহের তালিকায় । টাকা পয়সা দিয়ে মহঃ ছোটেলাল এফআইআর থেকে তার নাম বাদ করে দেওয়ার টোপ দেয় এই পরিবারকে বলে অভিযোগ প্রসেনিজিতের। কিন্তু এই লোভে আর পড়েনি এই অসহায় পরিবার।
শেষ পর্যন্ত বিচার না পেয়ে এবার দুর্গাপুরের কোকওভেন থানা এলাকার এল. বি টাইপের নিজের বাড়ি থেকে বোনের খুনের সুবিচার চাইতে সাইকেলে করে কলকাতার রাজভবনে রাজ্যপালের কাছে রওনা দিলেন উমার দাদা প্রসেনজিত স্বর্ণকার। সমস্ত নথি নিয়ে রাজভবনের উদ্যেশে রওনা দিইয়েছেন প্রসেনজিৎ, আর্জি বোনের খুনির শাস্তি, আর দুই ভাগ্নে ভাগ্নির খোঁজ পাওয়া।
মেয়ের শোকে ব্রেন স্ট্রোকে অসুস্থ উমার বাবা, এক চোখে দৃষ্টিও হারিয়েছে। মায়ের চোখের জল আজ শুকিয়ে গেছে সুবিচারের আশায় থাকতে থাকতে। মেয়ে গেছে এবার ছেলের ওপর কোনো আঁচ আসবে না তো? এই আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়েছে গোটা পরিবারের।
এখনো ভয় একটা আছে, সাইকেল রাজভবন পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে তো প্রসেনজিৎ? পুলিশের ব্যর্থতা ঢাকতে সেই সাইকেল আটকে দেওয়া হবে না তো মাঝ পথে? তবুও মনের অদম্য ইচ্ছে শক্তির জোরে এক দাদা বোনের খুনের বিচারের আশায় সব প্রতিকূলতাকে জয় করে পৌঁছতে চাইছেন রাজ্যপালের কাছে।