বিধানসভা ভোটে এবার দুর্গাপুরের নেতৃত্বে প্রাক্তন মেয়র?
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ৯ডিসেম্বরঃ
২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের নির্দিষ্ট দিন বা নির্ঘন্ট প্রকাশিত না হলেও শাসক বিরোধী সব দলই নিজেদের মতো করে ভোটের ময়দানে নেমে পড়েছে জনতা জনার্দনের মন পেতে। তবে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে একদিকে যেমন শাসকদলের মধ্যে চলছে বেশ অস্থিরতা তেমনই বিরোধী দল বিজেপি এই রাজ্যে বিধানসভায় পদ্মফুল ফোটেতে ছিদ্রান্বেষীর ভূমিকা নিতে এতটুকু কার্পণ্য করছে না। এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতির সব থেকে “হট টপিক” প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের লড়াকু নেতা শুভেন্দু অধিকারী অবস্থান। পাশাপাশি রাজ্যে শাসকদলের আরো বেশ কয়েকজন প্রথম সারির নেতা কিংবা বিধায়কের দল ছাড়ার বিষয়টিও বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে বিরোধীদের কোমরের জোর বাড়াতে সাহায্য করছে, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এমতবস্থায় ভাঙ্গন রুখতে দলের সুপ্রিমো দলের সমস্ত সারির নেতা নেত্রীদের একত্রিত হয়ে কাজ করার বারবার পরামর্শ দিচ্ছেন। আজও দুর্গাপুর ছাড়ার আগে দুর্গাপুরের সকল জনপ্রতিনিধিদেরও এই বার্তা দেন। বলেন, ভুল বোঝাবুঝি দূরে সরিয়ে রেখে এক সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সাধারন মানুষের জন্য কাজ করে যেতে। গতকাল দুর্গাপুরে সার্কিট হাউসের উদ্বোধনের পর সেখানেই রাত্রিযাপন করে আজ সকালে বনগাঁর জনসভার উদ্দ্যেশে রওনা দেওয়ার আগে ভগৎ সিং ক্রীড়াঙ্গনে দলের জনপ্রতিনিধি, দুর্গাপুর নগর নিগমের সিংহভাগ কাউন্সিলর সহ মেয়রকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী একটি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে দলনেত্রী সকলকে এক সাথে চলার নির্দেশ দেন। শুধু বর্তমান জনপ্রতিনিধিরা নয় এদিন তিনি দুর্গাপুরের প্রাক্তন মহানাগরিক অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কেও সমস্ত মান অভিমান ভুলে ফের দলের সাথে কাজ করার অনুরোধ করেন তিনি। প্রসঙ্গতঃ গত বিধানসভা ভোটে অপূর্ব মুখোপধ্যায়কে পরাজিত করেন কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়ানো বিশ্বনাথ পারিয়াল, যিনি কিনা বর্তমানে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি। তারপর থেকে কার্যত নিজেকে ঘরবন্দী করে নিয়েছিলেন এক সময়ের জেলার প্রাক্তন সভাপতি তথা প্রাক্তন মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়। দলের কোনো কর্মসূচীতেই আর দেখা যায় না তাঁকে। লোকসভা নির্বাচনেও দুর্গাপুর কেন্দ্রে শোচনীয় হার হয়েছে দলের। এরপর ফের আর এক বিধানসভা নির্বাচন আসতে চলেছে। এমতবস্থায় অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কে দলের স্বার্থে সক্রিয় হতে বলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সাথে বেশ কিছু সময় উপস্থিত সকলের সামনে ফোনের মাধ্যমে কথোপকথনও করেন। তাহলে কি বর্তমান নেতৃত্বের উপর পুরোপুরি ভরসা রাখতে পারছেন না নেত্রী? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলের। এদিন তিনি প্রাক্তন মহানাগরিককে বর্তমান মহানাগরিকের কাজে সাহায্য করার জন্যও বলেন। এখানেও প্রশ্ন উঠছে যাঁকে এই শহরের অভিভাবক করলেন নেত্রী, তাঁর যোগ্যতা নিয়েও কি এখন সংশয় জাগছে মুখ্যমন্ত্রীর মনে? তবে সব কিছুর উপরে এখন দেখার বিষয় এটাই যে, সব অভিমান ভুলে মুখ্যমন্ত্রী তথা দলের সুপ্রিমোর অনুরোধে কতটা সাড়া দেন অপূর্ব মুখোপাধ্যায়।