পশ্চিম বর্ধমান ডিসট্রিক্ট ফিজিক্যাল কালচার অ্যাসোসিয়েশনের সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ পালন
আমার কথা, দুর্গাপুর, ২৪ আগস্টঃ
১৯৭৫ সালের ২৪ আগস্ট ইস্পাতনগরীর ট্রাঙ্ক রোডের হোস্টেল এভিনিউর একটি আবাসনে নির্মল সাহা, ভবেশ নাথ বিশ্বাস,স্বর্গীয় গোবিন্দ ভদ্র, স্বর্গীয় বিমল মোদক, বুধন ঘোষ সহ তখনকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত ক্রীড়াবিদরা গঠন করেছিলেন বর্ধমান ডিসট্রিক্ট ফিজিক্যাল কালচার অ্যাসোসিয়েশন। এই সংস্থার প্রথম সভাপতি ছিলেন তদানীন্তন বিধায়ক দীলিপ মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন নির্মল সাহা।
দুর্গাপুরে দেহসৌষ্ঠব ও শক্তি উত্তোলনকে জনপ্রিয় করতে এই সংস্থা দুর্গাপুর ইস্পাত, মিশ্র ইস্পাত স্টেডিয়াম, দেশবন্ধু ভবন ও
নেতাজী ভবন জিমনাসিয়ামে এদের কর্মকান্ড শুরু করে। এরপর যোগ ব্যায়ামকে জনপ্রিয় করতে এই সংস্থা এগিয়ে আসে। এই সংস্থার কর্মকান্ড বিস্তৃত হতে থাকে। দুর্গাপুর ছাড়িয়ে জেলাস্তরের বিভিন্ন প্রতিযেগিতায় সাফল্যের স্বাক্ষর রাখে দুর্গাপুরের ছেলেমেয়েরা। বেরিয়ে আসে এশিয়ান শক্তি উত্তোলক চাম্পিয়ন গোলাম মুস্তাফা, জাতীয় বডি বিল্ডিং চাম্পিয়ন অমিত পাকড়াশি।এরপর এ সংখ্যা বাড়তেই থাকে। দুর্গাপুর নগর নিগমের মেয়র থাকাকালীন রথীন রায়ের সহযোগিতায় ইস্পাত নগরী থেকে সিধু কানু স্টেডিয়ামে এই সংস্থার দপ্তর স্থানান্তরিত হয়। এই সংস্থা বেশ কয়েকবার ন্যাশানাল বডি বিল্ডিং, পাওয়ার লিফটিং ও যোগ ব্যায়াম চাম্পিয়নশীপ এর আয়োজন করে।
এরপর বর্ধমান জেলা ভাগ হলে এই সংস্থার নামকরণ হয় পশ্চিম বর্ধমান ডিসট্রিক্ট ফিজিক্যাল কালচার অ্যাসোসিয়েশন। আজ সৃজনীর বিপিন দাস প্রেক্ষাগৃহে অ্যাসোসিয়েশনের সুবর্ণ জয়জয়ন্তী বর্ষের উদ্বোধন করেন দুর্গাপুরের প্রাক্তন মহানাগরিক ও অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি রথীন রায়, দুর্গাপুরের প্রাক্তন মহানাগরিক ও অ্যাসেসিয়শনের বর্তমান সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায়, সমাজসেবী সুদেব রায় সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।
অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন এই সংস্থা গুটি গুটি পায়ে পঞ্চাশ বছরে পদার্পন করলো। তিনি বলেন স্বাস্থ্যই সম্পদ এই আপ্তবাক্য মনে রেখে খেলাধূলার অঙ্গনে এই অ্যাসোসিয়েশন দীর্ঘদিন ধরে দেহসৌষ্ঠব, শক্তি উত্তোলন ও যোগ ব্যায়াম এর প্রসারে নিরলসভাবে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
এই অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি ও প্রাক্তন মহানাগরিক রথীন্দ্রমোহন রায় বলেন এই বাংলা থেকে একদিন বহু বডি বিল্ডার তৈরী হয়েছে ও গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে আছে তাদের নাম। তিনি বলেন ভারতবর্ষে জন্ম নেওয়া যোগ ব্যায়াম আজ সারা বিশ্বে জনপ্রিয় ও বডি ফিটনেসের জন্য ব্যবহার করা হয়। তিনি বলেন এই অ্যাসোসিয়েশন তার কর্মকান্ড নিয়ে আরও এগিয়ে চলুক।
অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত রায় বলেন তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই সংস্থার সঙ্গে জড়িত। সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষে তাদের অঙ্গীকার আগামী প্রজম্মের ছেলেমেয়েদের সুস্বাস্থ্যের উপর নজর দেওয়া। পড়াশুনার চাপ ও মোবাইল ফোবিয়া থেকে তাদের বের করে যোগ প্রাণায়াম ও বডি বিল্ডিং এ উৎসাহী করা। তারা এ বিষয়ে অনেক পরিকল্পনা করেছেন। তিনি আর ও বলেন আগামী দিনে তাদের ন্যাশনাল বডি বিল্ডিং ও পাওয়ার লিফটিং প্রতিযোগিতা আয়োজন করার পরিকল্পনা আছে।
প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে ও কেক কেটে সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষের জন্মদিন এর সূচনা করেন অপূর্ব মুখোপাধ্যায়, রথীন্দ্র মোহন রায় সহ মঞ্চে উপবিষ্ট অতিথিবৃন্দ। উপস্থিত ছিলেনএই অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কর্মকর্তা ভবেশ নাথ বিশ্বাস। তিনি তার বক্তব্যে অ্যাসোসিয়েশনের জন্মলগ্নের কথা স্মৃতিচারণ করেন।
সম্বর্ধিত করা হয় শক্তি উত্তোলনে প্রাক্তন এশিয়া চাম্পিয়ন গোলাম মুস্তাফা ও এসিয়াড, কমনওয়েলথ ও বিশ্ব শক্তি উত্তোলনে স্বর্ণপদক প্রাপ্ত সীমা দত্ত চ্যাটার্জিকে।
এছাড়াও এ সংস্থার সঙ্গে জড়িত প্রাক্তন ও বর্তমান ক্রীড়াবিদদের সম্বর্ধনা জানানো হয়।
সবশেষে বডি বিল্ডিং ও যোগ ব্যায়াম প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।