উড়িষ্যা থেকে মালদহে ফিরতে না পেরে ভয়ে মুচিপাড়ার জঙ্গলে আশ্রয় নেওয়া অসহায় ফেরিওয়ালাদের রাখা হল নিরাপদে
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান, ৩১মার্চঃ
খিদের জ্বালা বড় জ্বালা আর এই জ্বালার কাছে হয়ত বা করোনা ভাইরাসের আক্রমন কোনো মানেই রাখে না মালদহের বাসিন্দা রহমান কিংবা মহসিনদের কাছে। পেশায় প্রসাধনী সামগ্রী আর ইমিটেশনের গয়না বিক্রেতা মালদহের এই বাসিন্দারা পেটের তাগিদে সুদূর উড়িষ্যায় গেছিল জিনিস ফেরী করতে। কিন্তু আচমকা লকডাউনের কারনে উড়িষ্যাতে আটকে পড়েন ওই মানুষগুলো। একদিকে করোনার আতঙ্ক অপরদিকে ঘরের মানুষগুলোর কাছে ফেরার তাড়নাতে অবশেষে বাইকে করেই রওনা দেন ১৪ জন মালদহ টাউনেও ফেরিওয়ালা। উড়িষ্যা থেকে রওনা দিয়ে এই রাজ্যে ঢুকে কিছুটা পথ এগোতেই এদের পথ আটকায় পুলিশ, আর ফের উড়িষ্যাতেই ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু তা ওই মানুষগুলোর পক্ষে সম্ভব নয়। অথচ আইন ভাঙ্গার ভয়ও রয়েছে তাই বাধ্য হয়েই তাঁরা মুচিপাড়ার কাছে একটি জঙ্গলে আশ্রয় নেন। এদিকে আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে ওই এলাকার বাসিন্দা কয়েকজন অটোচালক জঙ্গলের কাছে কয়কটি বাইক দাঁড় করানো দেখতে পায় যার নাম্বার প্লেট উড়িষ্যার। তা দেখে তাদের সন্দেহ হয়। ওই অটোচালকদের থেকে খবর পৌঁছয় কোকওভেন থানার পুলিশ ও ৪নং বোরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দোপাধ্যায়ের কাছে। খবর পাওয়া মাত্রই তাঁরা ওই জঙ্গলের কাছে পৌঁছে ওই ১৪জন ফেরিওয়ালাকে আস্বস্ত করে জঙ্গল থেকে বের করে আনেন। এরপর প্রথমেই তাদের খাবারের বন্দোবস্ত করেন। এরপর তাদের প্রত্যেকের স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা করেন। সব কিছু হয়ে যাওয়ার পর চন্দ্রশেখরবাবু বিষয়টি দুর্গাপুর মহকুমা শাসক অনির্বাণ কোলেকে জানান। এরপর মহকুমা শাসকের সাহায্যে আপাততঃ ওই ১৪জন ব্যাক্তিকে কোকওভেন থানার কাছে একটি লজে থাকার ব্যবস্থা করেন। ৩০-৪৫ এর মধ্যে বয়স ওই মানুষগুলি আপাততঃ লকডাউনের কাছে নতি স্বীকার করলেও তাদের এখন একটাই ভয়, না করোনার ভয় নয়, ভয় কবে কিভাবে তাঁরা নিজের পরিবারের কাছে ফিরবে।