স্ত্রীর হাত কেটে দিয়েছে স্বামী-“বিরলতম হিংস্র ঘটনা”র আখ্যা রাজ্য মহিলা কমিশনের
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ৭জুনঃ
এবার রেনুর পাশে দাঁড়ালো রাজ্য মহিলা কমিশন। মঙ্গলবার দুর্গাপুরে হাসপাতালে রেনুর সাথে দেখা করে গেলেন রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলে তার কর্মজীবনে এত জঘন্য ঘটনা তিনি দেখেননি। তিনি আবেদন করবেন যাতে এই ঘটনাটিকে বিরলতম হিংস্র ঘটনা হিসেবে দেখে তবেই যেন দোষীদের বিচার হয়। সাথে তিনি এত বলেন ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রেনুর স্বামী শুধু নয়, তাকে তার যে যে বন্ধুরা ঘটনাটি ঘটাতে সাহায্য করেছে প্রত্যেকের যেন কঠিন শাস্তি হয়। লীনাদেবী আরো জানান যে রেনু বর্তমানে মানসিকভাবে অনেকটাই স্থিতিশীল আর সে তার সরকারী চাকরিটি ফিরে পেতে চায়। রেনু যাতে তার চাকরি পায় তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন লীনাদেবী।
প্রসঙ্গতঃ কেতুগ্রাম ১নং ব্লকের চিনিসপুর গ্রামের বাসিন্দা শের মহম্মদ একটি মুদিখানার দোকান চালায়। তারই স্ত্রী রেনু খাতুন ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখতো নার্স হওয়ার। সেই মতো নার্সের ট্রেনিং নিয়ে দুর্গাপুরে একটি বেসরকারী হাসপাতালে নার্সের চাকরি করছিলেন। এরপর তিনি কয়েকদিন আগে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করায় সরকারী হাসপাতালে নার্সের চাকরির তালিকায় নাম ওঠে। এই খবর পাওয়ার পর থেকেই রেনুর স্বামীকে তার বন্ধুরা উস্কাতে থাকে যে “বউ সরকারী চাকরি পেয়ে তাকে ছেড়ে চলে যাবে” এমনটাই অভিযোগ রেনুর। তখন থেকে শের মহম্মদ রেনুকে এই চাকরি না নেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু নিজের লক্ষ্যে স্থির রেনু তা না মানায় রবিবার মধ্যরাতে রেনুর স্বামী তার কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে ঘরে ঢোকে যখন রেনু ঘুমোচ্ছিল। ঘরে ঢুকে রেনুর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে প্রথমে হাতুড়ি দিয়ে রেনুর ডান হাতে আঘাত করে হাত থেঁতলে দেয়। তারপর টিন কাটার কাঁচি দিয়ে রেনুর হাতের কবজি থেকে কেটে ফেলে। রক্তাক্ত অবস্থায় রেনুকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আর তারপর দুর্গাপুরে শোভাপুরে একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। তবে রেনুর ডান হাত আর কখনও জোড়া লাগানো যাবে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ঘটনার পরেই গা ঢাকা দিয়েছে রেনুর অভিযুক্ত স্বামী। রেনুর শ্বশুর শাশুড়ীকে পুলিশ ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে। তাদের বিচারক ৫ দিনের পুলিশী হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে মনের দিক থেকে খুবই শক্ত রেনু ঘটনার প্রাথমিক ধাক্কা এর মধ্যেই সামলে উঠেছেন। থেমে তিনি থাকবেন না তাই ইতিমধ্যেই বা-হাত দিয়ে লেখার অভ্যাস শুরু করে দিয়েছেন৷