এডিডিএকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে সিটিসেন্টারে পার্কিং লটের নামে অবৈধ ব্যবসা
আমার কথা, দুর্গাপুর, ৪ অক্টোবর:
পার্কিং লট করতে হবে এই সত্বে সরকারী জমি টেন্ডার ডেকে তুলে দেওয়া হয়েছিল “আকাশ বডি বিল্ডার” নামে একটি বেসরকারী সংস্থাকে। ১ কোটিরও বেশি টাকার বিনিময়ে সিটিসেন্টারের মতো অভিজাত এলাকায় বেশ অনেকটা জায়গা ওই কোম্পানী পায়, যার মালিক সুজয় পাল ওরফে কেবু। ২৩ আগস্ট আনুষ্ঠানিক ভাবে সত্ত্বাধিকার পায় কেবুর কোম্পানী। তারপর আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ণ পর্ষদের সেই সত্ত্বকে কার্যত বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দিনে দুপুরে ডাকাতি করতে নামল কেবু এন্ড কোম্পানী। সিটিসেন্টারের বেশ কিছু জায়গা দখল করা জায়গা থেকে অস্থায়ী দোকান উচ্ছেদ করেছিল এডিডিএ। তারপর সেই জায়গাগুলিকে “এডিডিএর জায়গা” (Land belongs to adda) বলে চিহ্নিত করে তা ঘিরেও দেওয়া হয়েছিল। এরপর সেই জায়গাগুলি ই-অকশনের মাধ্যমে পার্কিং লট করার জন্য টেন্ডার ডাকা হয় এডিডিএ এর পক্ষ থেকে। মোটা টাকার বিনিময়ে সেই টেন্ডারটি পান কেবু। কিন্তু দেখা গেল নামেই দখলদার উচ্ছেদ হল, বকলমে দখল থেকেই গেল। শুধু বদল হল মালিকানা।
আসলে বিষয়টা কি?
বিষয়টা হল এইরকম, যে জায়গায় পুর্বে ফলের দোকান, খাবারের দোকান, ভাতের হোটেল কিংবা সাইকেল স্ট্যান্ড বা পুরোনো গাড়ি বিক্রির অস্থায়ী দোকান ছিল সেগুলি আবার নতুন রূপে সেজে বসল ওই একই জায়গায়।
কিন্তু কি করে তা সম্ভব?
দেখা গেল সিটিসেন্টারের আম্বেদকর সরণীর উপরে এডিডিএ এর পার্কিং লটের জায়গায় কিছু ব্যবসায়ী সাজিয়ে গুছিয়ে পুরোনো গাড়ি বিক্রির ব্যবসা ফেঁদে বসেছেন। তাদের মধ্যে একজনকে যখন এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয় তখন তিনি সদর্পে বলেন “এডিডিএ যাকে এই জায়গার টেন্ডার দিয়েছে তিনিই আমাকে এই জায়গাটি ভাড়া দিয়েছেন আর তার বিনিময়ে ওই কোম্পানীকে মাসে মোটা টাকা ভাড়াও দিচ্ছি”। শুধু তাই নয় ওই ব্যবসায়ী এও জানান যে, এডিডিএ থেকে নাকি জায়গাটি পরিদর্শনও করে গিয়েছে। তাই কিছু জানার হলে এডিডিএ আর ওই টেন্ডার পাওয়া ওই কোম্পানীর মালিকের সাথে কথা বলতে বলেন ওই ব্যবসায়ী।” অপরদিকে অবনীন্দ্র বীথীতে তৃণমূলের ২নং ব্লক অফিসের গায়েই যে হোটেল ও খাবারের দোকান এডিডিএ থেকে ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছিল, ওই জায়গায় ফের সেই হোটেলগুলি আবার নতুনভাবে ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে, সৌজন্যে সেই কেবু এন্ড কোম্পানী। আর এই কেবু এন্ড কোম্পানীর মোটা টাকার শর্ত মানতে অক্ষম যারা তাঁরা হারাতে বসেছেন তাদের রুজি রোজগারের একমাত্র অবলম্বন। যেমন সিটিসেন্টার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সাইকেল স্ট্যান্ডের ঝন্টু ধারার মতো চার-পাঁচজন ব্যবসায়ী। তাদের অভিযোগ কেবু এন্ড কোম্পানী তাদের সাইকেল স্ট্যান্ড সেখানে করতে দেবে বলেছে কিন্তু তার বিনিময়ে প্রতিদিন তাদের দিতে হবে ১২ হাজার ৫০০ টাকা করে ভাড়া। যদিও এই টাকা দিতে অপারগ ওই ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও ওই এলাকায় রয়েছেন বেশ কিছু ছোট ছোট ব্যবসায়ী, যাদের অভিযোগ, রীতিমতো ‘হপ্তা’ আদায় করছে কেবু এন্ড কোম্পানী, যা দিতে গিয়ে তাদের উঠছে নাভিশ্বাস।
এ বিষয়ে এডিডিএয়ের চেয়ারম্যান তাপস বন্দোপাধ্যায় বলেন, “ইতিমধ্যেই এই অভিযোগগুলি আমার কাছে এসে পৌঁছেছে। এই বিষয়ে আমি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। অভিযোগের সত্যতা প্রমান হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে”।
(পরবর্তী অংশ প্রকাশিত হবে আগামীতে)