স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক, দুর্গাপুরে পিটিয়ে মারা হল প্রেমিককে, পলাতক স্বামী
আমার কথা, কাঁকসা, ২০ মার্চঃ
এক যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল এক প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে কাঁকসা থানার অন্তর্গত গোপালপুর এলাকায়। অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় এলাকাবাসীরা। ঘটনায় দুজনকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে।
গোপালপুরের উত্তরপাড়া এলাকায় বসবাস করতো পবিত্র বিশ্বাস(২৭) নামে এক যুবক। পবিত্রর মামী ইতু মন্ডল জানান মঙ্গলবার রাত থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না বলে পবিত্রকে। এরপর রাত দেড়টা নাগাদ পবিত্র তাঁর বন্ধুদের ফোন করে তাড়াতাড়ি শম্ভূর বাড়ির সামনে যেতে বলে। তাঁকে মেরে ফেলা হতে পারে বলেও জানিয়েছিল পবিত্র। কিন্তু সেই সময় শম্ভূর বাড়ির সামনে গিয়ে পবিত্রকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। সাথে পবিত্রর ফোনও সুইচ অফ হয়ে যায়। এরপর রাত তিনটে নাগাদ শম্ভূর বাড়ি থেকে পবিত্রর বাড়িতে ফোন করে জানানো হয়, পবিত্র তাদের বাড়ির সামনে মদ খেয়ে পড়ে আছে। এরপর বুধবার ভোর রাত ৩টে নাগাদ এলাকারই শম্ভূ দাস নামে এক ব্যাক্তির বাড়ির সামনে থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পবিত্রকে পাওয়া যায়। তড়িঘড়ি পবিত্রকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করে মৃত বলে জানান। শম্ভূর সারা শরীরে মারধরের চিহ্ন রয়েছে। গলায় ফাঁসের দাগ রয়েছে। শম্ভূ দাসের জামাই গৌরব বালা(৩৫) ও ভাগ্নে বিক্রম বালা(২৩)কে পুলিশ আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। অন্যদিকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে মূল অভিযুক্ত শম্ভূ দাস। তাঁকে পুলিশ খুঁজছে। এলাকায় সুদের ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত শম্ভূ দাস।
অন্যদিকে পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, শম্ভূ দাসের স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল পবিত্রর। বিষয়টি শম্ভূ দাস জানতে পেরে যায়। এ নিয়ে তাঁর স্ত্রীর সাথে অশান্তিওও চলছিল। গতকাল রাতে পবিত্রকে শম্ভূ দাসের বাড়িতে তাঁর স্ত্রীর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলে শম্ভূ। এরপরেই পবিত্রকে ব্যাপক মারধর শুরু করে। সাথে গলাও টিপে ধরে। সম্ভবতঃ তাতেই মৃত্যু হয়েছে পবিত্রর। তবে মৃত্যু সঠিক কারন জানার জন্য পুলিশ পবিত্রর মৃতদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।
এদিকে, ঘটনার পরেই এলাকার লোকজন শম্ভূর বাড়িতে চড়াও হয়। ভাঙ্গচুর চালানোর পাশাপাশি একটি গাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দেয় বলে স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে। ঘটনাস্থলে দেরিতে পৌঁছোনোর জন্য পুলিশের বিরুদ্ধেও একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন পবিত্রর পরিবার। ঘটনাস্থলে যান এসিপি(কাঁকসা) সুমন জয়সওয়াল। তিনি জানান, “এই খুনের পেছনে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে সে পালিয়ে গেছে। পুলিশ তাঁর খোঁজ চালাচ্ছে। পুরো বিষয়টা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে”,।
প্রসঙ্গত: পবিত্র বিশ্বাস যুব তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত ছিল। অন্যদিকে এলাকায় শম্ভূ দাস বিজেপির সমর্থক বলে জানা যায়। সুতরাং এটি কোনো রাজনৈতিক খুন কিনা উঠছে সেই প্রশ্নও।
তবে, পরিস্থিতি আয়ত্বে রাখতে এলাকায় রয়েছে কাঁকসা থানার পুলিশ।