মাওবাদী মোকাবিলায় যে হাতে বন্দুক ওঠে, করোনা মোকাবিলায় এখন সেই হাতই তৈরী করছে মাস্ক
“মাওবাদী মোকাবিলায় যে হাতে তাঁরা বন্দুক ধরেন, করোনা রুখতে সে হাতেই এখন তৈরি করছেন মাস্ক। “হ্যান্ড মেড মাস্ককে মডেল হিসেবে সামনে রেখে গ্রামের মহিলাদেরও এই ধরণের কাজ করতে উৎসাহ দিচ্ছেন সিআরপিএফের মহিলা জওয়ানরা। ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ কলোনীতে থাকা সিআরপিএফের ২৩২ নম্বর মহিলা ব্যাটেলিয়নের জি কোম্পানির মহিলা জওয়ানরা নিজেদের হাতে বানানো মাস্ক বিতরণ করেন ঝাড়গ্রাম ব্লকের ধরমপুর-রানাপাড়া গ্রামে। এদিন দুপুরে গ্রামের মাঠে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই আট থেকে আশি সকলের হাতে সেই মাস্ক তুলে দেওয়া হয়। একদা মাওবাদী অধ্যুষিত জঙ্গলমহলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সিআরপিএফ মোতায়ন করা হয়েছিল। এখন সেই জওয়ানরা স্থানীয় বাসিন্দাদের উন্নয়নের জন্য নানা কর্মসূচী গ্রহণ করছেন।
গত কয়েকদিন ধরে সিআরপিএফের ২৩২ নম্বর মহিলা ব্যাটেলিয়নের ক্যাম্পে সেলাই মেশিনে মাস্ক তৈরি করেন সিআরপিএফের হেড কনস্টেবল শিখা মণ্ডল, কনস্টেবল চন্দ্রকলা, সুমন শমারা। তাঁরা বলেন, “বাড়িতে থাকা কাপড় দিয়েই এই মাস্ক তৈরি করা যাবে। আমাদের কাছে থাকা নতুন কিছু কাপড় দিয়ে আমরা ১৮০ টি মাস্ক তৈরি করেছিলাম। কাপড়ের ঘাটতি থাকায় বেশি করা যায়নি।”
এদিন ধরমপুর-রানাপাড়া গ্রামে মাস্ক বিতরণ অনুষ্ঠানে মহিলা ব্যাটেলিয়নের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডান্ট রবিন পি জে বলেন, “এখন কোভিড ১৯ মোকাবিলার ক্ষেত্রে সকলের মাস্ক পড়া কতটা জরুরি তা বোঝানোর পাশাপাশি সামাজিক দূরত্বের বিষয়টিও আমরা গ্রামবাসীদের বুঝিয়েছি। ২০১৮ সাল থেকে বিভিন্ন গ্রামে আমরা মহিলাদের স্বনির্ভর করার জন্য সেলাই মেশিন বিনামূল্যে বিতরণ করেছিলাম। এবার দেশরক্ষার স্বার্থে সেই সব মহিলারা এগিয়ে এসে কীভাবে হ্যান্ড মেড মাস্ক তৈরি করতে পারবেন তা দেখানোর পাশাপাশি নতুন ১৮০টি মাস্কও তুলে দিয়েছি গ্রামবাসীদের হাতে। আশা করি গ্রামের মহিলারাও এভাবে বাড়িতে নিজেরাই মাস্ক তৈরি করলে বাজারে যে সংকট দেখা দিয়েছে তা থেকে অনেকটা সুরাহা পাওয়া যাবে।”
মাস্ক হাতে পেয়ে খুশি গ্রামের মহিলা সুজাতা রানা, মালতী শবর থেকে সুনীল রানা, সুভাষ রানারাও।