মমতার মঞ্চে গুরুদুয়ারা কমিটির সভাপতি, শিখদের ভোট যাচ্ছে তৃণমূলে?
আমার কথা, দুর্গাপুর, ৭ মেঃ
একদিকে যখন আসানসোল কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শিখ সম্প্রদায়ের মানুষদের কাছে বিবেচনা করে ভোট দেওয়ার আবেদন জানালেন, তখন পরেরদিনই তৃণমুলের সভামঞ্চে দেখা গেল কেন্দ্রীয় গুরুদুয়ারা প্রবন্ধ কমিটির সভাপতিকে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি শিখ সম্প্রদায়ের ভোট কি যাচ্ছে তৃণমূলেই?
প্রসঙ্গতঃ সন্দেশখালিতে কর্তব্যরত শিখ সম্প্রদায়ের আইপিএস অফিসার জসপ্রীত সিং কে খালিস্থানি বলে মন্তব্য করা হয় বিজেপির পক্ষ থেকে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য ছাড়িয়ে দেশের রাজনীতি। মন্তব্যের কারণে অভিযুক্ত বিজেপি নেতার গ্রেফতার ও ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে ছিলেন শিখেরা। ঘটনার পর পেরিয়ে গেছে বেশ কিছুটা সময়। কালের নিয়মে বিষয়টিও অনেকটা স্তিমিত হয়ে এসেছিল। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পরতে বিষয়টি আবার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। আসানসোল কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়ার নাম ঘোষণার পরেই কেন্দ্রীয় গুরুদুয়ারা প্রবন্ধ কমিটির সভাপতি তেজেন্দ্র সিং জানিয়ে ছিলেন ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত বিজেপির কোন প্রার্থী গুরুদুয়ারাতে এলে তাকে মাইক হাতে বক্তব্য (ভোট প্রার্থনা) রাখতে দেওয়া হবে না।
এরপর গত ১৩-ই এপ্রিল শনিবার বর্তমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ দুর্গাপুরের বেনাচিতি গুরুদুয়ারাতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কমিটির পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় প্রার্থী এলে আপত্তি নেই, কিন্তু ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত প্রার্থী গুরুদুয়ারার ভিতর কোন রকম বক্তব্য রাখতে পারবেন না। কিন্তু গুরুদুয়ারে উপস্থিত শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজনের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেও কোন ক্ষমা প্রার্থণা বা ভোট বার্তা না দিয়েই দিলীপবাবু বেরিয়ে যান গুরুদুয়ারা থেকে। অপরদিকে ওই একই দিনে কুলটিতেও গুরুদুয়ারায় আহলুওয়ালিয়া যান কিন্তু তাঁর ক্ষেত্রেও একই শর্ত রাখা হয়েছিল। গুরুদুয়ারা প্রবন্ধ কমিটির পক্ষে তেজেন্দ্র সিং বলেন প্রার্থী ক্ষমা চাননি তাই বক্তব্য রাখার অনুমতিও তাকে দেওয়া হয়নি কমিটির পক্ষ থেকে।
বিষয়টি নিয়ে প্রার্থীর পাশাপাশি অস্বস্তিতে পড়ে বিজেপি দলও। তাই বিজেপি প্রার্থী গুরুদুয়ারাতে গিয়ে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজনের সাথে সৌজন্য বিনিময় করলেও সম্পর্কের বরফ গলেনি কোনো পক্ষেই। ফলে আলোচনার শীর্ষে রয়েই যায় যে তাহলে কি বিজেপির ব্যাংকে একটি ভোটও পড়বে না শিখদের? এদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে বরফ গলানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। রবিবার রানীগঞ্জের পাঞ্জাবী মোড়ে গুরুদুয়ারায় গিয়ে শিখেদের উদ্দেশ্যে বিবেচনা করে ভোট দেওয়ার আর্জি জানিয়ে আসেন আহলুওয়ালিয়া। আর পরেরদিনই জল্পনাকে আরো উস্কে দিলো সোমবার দুর্গাপুরে তৃণমূলের দলনেত্রীর নির্বাচনী জনসভা, যেখানে মঞ্চে দেখা গেল খোদ কেন্দ্রীয় গুরুদুয়ারা প্রবন্ধ কমিটির সভাপতি তেজেন্দ্র সিংকে। মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীকে উপহারও দেন তেজেন্দ্র সিং। তাহলে কি তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদকেই সমর্থণ শিখেদের?