বাজেয়াপ্ত শব্দবাজি নিষ্ক্রিয় করার দরুণ দুর্গাপুরের বাতাসে মিশছে বিষ?
আমার কথা, দুর্গাপুর, ২৯ জানুয়ারীঃ
বাজেয়াপ্ত হওয়া নিষিদ্ধ আতশবাজি নিষ্ক্রিয় করল পুলিশ। দুর্গাপুজো,কালীপুজো এবং বিভিন্ন সময় দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপ থানা এলাকা থেকে বহু নিষিদ্ধ আতশবাজি ও শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। বুধবার দুপুরে দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপ থানার জেমুয়া সংলগ্ন কুনুর নদীর পাড়ে সেগুলি নিষ্ক্রিয় করা হয়। এদিকে সেই বাজেয়াপ্ত শব্দবাজি নিষ্ক্রিয় করার সময় প্রচন্ড শব্দ ও ধোঁওয়ায় ভরে যায় এলাকা। যার দরুন আতঙ্কিত হয়ে পরে এলাকাবাসীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, এদিন ২৪ কেজি নিষিদ্ধ আতশবাজি ও চকলেট বোম নিষ্ক্রিয় করা হলো। এর আগেও বাজেয়াপ্ত হওয়া অনেক আতশ বাজি নিষ্ক্রিয় করা হয়েছিল। দমকল বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে এই কাজ চলে দুর্গাপুরে।
উল্লেখ্য, ডিসেম্বর মাসের ১৮ তারিখে পান্ডবেশ্বরের অজয়ের পাড়ে প্রচুর শব্দবাজি নিষ্ক্রিয় করা হয়েছিল। ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত্য যত নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল সেগুলি বোম স্কোয়াডের বিশেষজ্ঞ দল, এম্বুলেন্স, মেডিকেল টিম, দমকল বিভাগের কর্মীদের উপস্থিতিতে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
নিষিদ্ধ শব্দবাজির ব্যবহারে বিষবাষ্প বাতাসে মিশে তা ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে আর তাঁর দরুণ রোগে আক্রান্ত হয় স্থানীয় বাসিন্দারা। উল্লেখ্য,১৯৯৮ সাল কলকাতা হাইকোর্ট রায় দেয় রাজ্যে নব্বই ডেসিবেলের ওপর শব্দবাজি ফাটানো নিষিদ্ধ করা হয়। প্রধানত রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও পুলিশের উপর দায়িত্ব পড়ে সে রায় কার্যকর করার। পাশাপাশি ২০২১-এর ২৯ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এমআর শাহ ও বিচারপতি এ এস বোপান্নার ডিভিশন বেঞ্চ বাজি নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছিল। শুধুমাত্র সবুজ বাজি বা গ্রিন ক্র্যাকার ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছিল। সমস্ত রাজ্যের সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে গুরুত্ব দিয়ে সেই নির্দেশ মেনে চলার কথা বলা হয়েছিল। বেরিয়াম সল্ট ব্যবহার করা হয় এমন বাজিকে নিষিদ্ধ করা নির্দেশ ছিল। কিন্তু তারপরেও প্রতিবছরই কালীপুজো বা দেওয়ালির দিন সারা রাজ্যের সাথে শিলাঞ্চল দুর্গাপুরেও শব্দবাজির দাপট শোনা যায়। কিন্তু এই সবুজ আতশবাজির আড়ালে যে নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রি হয় প্রতিবছরই, তা প্রমানিত হয়, পুলিশের এই বাজি নিষ্ক্রিয় কর্মকান্ডে। এদিকে দূষণে দিল্লির রেকর্ড ছুঁই ছুঁই করছে এই শিল্পনগরী। ফলে প্রশ্ন উঠছে পুলিশ কি ব্যার্থ নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রি আটকাতে? এছাড়াও শহরবাসীর আরো অভিযোগ, বাজেয়াপ্ত শব্দবাজি নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে পরোক্ষে বাতাসে কি বিষবাষ্প মিশছে না? অন্য আর কোনো পদ্ধতি অবলম্বন করা কি সম্ভব নয় এই নিষ্ক্রিয় কাজের ক্ষেত্রে?