পদ্মফুলে ‘জিতেন’ কাঁটা, দুর্গাপুরে বিজেপির কার্যালয়ে তালা মারলো কর্মীরা
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ১৮মার্চঃ
“পান্ডবেশ্বরে তৃণমূলের বিধায়ক থাকাকালীন বিজেপি কর্মীদের উপর অকথ্য অত্যাচার করেছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারী। দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের পাটশ্যাওড়া গ্রামের অনেক বিজেপি কর্মীরা আজ দু’বছর ধরে জেলে রয়েছে ওনার কারনে। শুধু তাই নয়, জিতেন তিওয়ারীর কারনে এখনও আমাদের অনেক কর্মীদের আদালতে হাজিরা দিতে হয়। সেখানে ওই ব্যাক্তিকে কি করে আমরা প্রার্থী মানব”- এমনটাই অভিযোগ এনে বিজেপির পান্ডবেশ্বরের বিজেপি প্রার্থী জিতেন্দ্র তিওয়ারীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন পান্ডবেশ্বরের ৩নং মন্ডলের যুব মোর্চার সহ সভাপতি মধু রায়। দল যদি জিতেন্দ্র তিওয়ারীর নাম প্রত্যাহার না করে তাহলে তাঁরা নির্দল প্রার্থী দাঁড় করাবে বলেও হুঁশিয়ারী দেন।
বৃহস্পতিবার বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষনার পরেই দেখা যায় পান্ডবেশ্বর কেন্দ্রে জিতেন্দ্র তিওয়ারী, দুর্গাপুর পূর্বে দীপ্তাংশু চৌধুরীকে প্রার্থী করা হয়েছে, যারা সদ্য তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এদিকে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার কিছুদিন আগে থেকেই পান্ডবেশ্বরের রাজনীতির আকাশে বাতাসে প্রতিবাদের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। সেই গন্ধে ছিল দলের বিরুদ্ধে কর্মীদের একাংশের ক্ষোভ। তাঁরা একপ্রকার ঘোষণাই করে দিয়েছিলেন যে জিতেন্দ্র তিওয়ারীকে যদি প্রার্থী করা হয় দলের তরফে তাহলে তা তাঁরা কিছুতেই মেনে নেবে না। কিন্তু তারপরেও দেখা গেল ওই কেন্দ্রে জিতেন্দ্র তিওয়ারীকেই প্রার্থী করা হল। ফলে বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদের এবার ভেতরের ক্ষোভ বাইরে প্রকাশ পেল। এদিন তাঁরা প্রতিবাদ স্বরূপ দুর্গাপুরের ৩১নং বিদ্যাসাগর অ্যাভিন্যুয়ে বিজেপির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান আর বিক্ষোভের পরেই ওকই কার্যালয়ে তালা বন্ধ করে দেন।
তাদের বক্তব্য যে অত্যাচারী জিতেন্দ্র তিওয়ারীকে তাঁরা মানছে না মানবে না। দল জিতেন্দ্র তিওয়ারীকে বাদে অন্য যে কাউকে প্রার্থী করুক, তাঁকেই সমর্থন দেবেন তাঁরা, কিন্তু জিতেন্দ্র তিওয়ারীকে কিছুতেই মানবে না তাঁরা। প্রয়োজনে নির্দলে ভোট দেবেন।
তবে এ বিষয়ে পান্ডবেশ্বরের বিজেপি প্রার্থী জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান, ” কর্মীদের মনে অন্য কোনো ভাবনা থাকলে তাৎক্ষণিক এই ক্ষোভ প্রকাশ স্বাভাবিক। আমি তাদের কনফিডেন্সে নিয়েই প্রচারে নামব ।
বিজেপি কর্মীদের দলের উচ্চস্তরের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধাচরনে পদ্মফুলে যে কাঁটা বিধঁলো তাতে চরম অস্বস্তিতে পড়ল দল। নির্বাচনে আর মোটে কয়েকটা দিন বাকি, তার মধ্যেই দুর্গাপুরের এই ঘটনা কি শিল্পাঞ্চলের বিজেপি নেতৃত্বের কাছে “সাপের ছুঁচো গেলা”র মতো অবস্থা হল?