বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে কি অবাঙ্গালী ফর্মুলাই কাজে লাগালো তৃণমূল! প্রার্থী কীর্তি আজাদ
আমার কথা, মুনমুন দত্ত, দুর্গাপুর, ১০ মার্চঃ
সব জল্পনা কল্পনার অবসান হল ব্রিগেডে জন গর্জন সভা মঞ্চে। ৪মার্চ সোমবার অন্ডালের কাজী নজরুল বিমানবন্দরে নামেন ভারতীয় প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ। আর তারপরেই নানা মহলে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দু হয়ে ওঠেন কীর্তি আজাদ। লোকমুখে ঘুরতে শুরু করে এবারের লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে তৃণমূলের হয়ে ভোট ময়দানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নামতে পারেন এই অবাঙ্গালী ক্রিকেটার। তবে সংবাদ মাধ্যমে ‘আমার কথা’ নিউজে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল এই কেন্দ্রটিতে তৃণমূল প্রার্থী হতে চলেছেন ৮৩ এর বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য কীর্তি আজাদ।
আজ রবিবার কলকাতার ব্রিগেডে ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের জন গর্জন সভা। সেই সভামঞ্চ থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় রাজ্যের ৪২টি কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রটির প্রার্থী হিসেবে নাম বলা হয় কীর্তি আজাদের। তবে আসানসোল কেন্দ্রটিতে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শত্রুঘ্ন সিনহাই রয়ে গেলেন।
গত লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রটি তৃণমূলের হাত থেকে চলে যায় বিজেপির হাতে। জয়ী হয়েছিলেন অবাঙ্গালী বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দরজিৎ সিং আলুওয়ালিয়া। তিনি মোট ৫ লক্ষ ৯৮ হাজার ৩৭৬ ভোট পান আর তৃণমূলের মমতাজ সংঘমিতা পান ৫লক্ষ ৯৫ হাজার ৯৩৭ ভোট। অর্থাৎ মাত্র ২,৪৩৯ ভোটের ব্যবধানে আসনটি ছিনিয়ে নিয়ে যান আলুওয়ালিয়া। স্বভাবতই কীর্তি আজাদকে এই কেন্দ্রে প্রার্থী করাতে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন আসানসোল কেন্দ্রের মতোই এই কেন্দ্রেও অবাঙ্গালী প্রার্থী করা হল। কারন গত নির্বাচনে দেখা গেছে এই কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচটিতেই তৃণমূল জিতলেও দুর্গাপুর পূর্ব ও পশ্চিম কেন্দ্রটিতে জিতে যান অবাঙ্গালী বিজেপি প্রার্থী এস এস আলুওয়ালিয়া। আর এই জেতার অক্সিজেন জুগিয়েছে দুটি বিষয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রথমতঃ এই দুটি বিধানসভা কেন্দ্রে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আর দ্বিতীয় কারন হল অবাঙ্গালী ভোটার। যেমন দুর্গাপুর পূর্বের অন্তর্গত এলাকাগুলিতে প্রচুর পাঞ্জাবী ভাষার মানুষ বসবাস করেন, যাদের সমর্থন গিয়েছিল আলুওয়ালিয়ার কাছে। এছাড়াও দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রে বাঙ্গালী ছাড়াও অবাঙ্গালী নানা ভাষার মানুষ বাস করেন। যেমন পাঞ্জাবী ছাড়াও বিহারের হিন্দিভাষী বহু মানুষ এই কেন্দ্রে বাস করেন। তাদের ভোট গিয়েছিল বিজেপির কাছে।
তাহলে কি শাসকদলের বিশ্লেষকরা কি এই অবাঙ্গলী ফর্মূলাকেই কাজে লাগিয়ে এই এই কেন্দ্রটিকে পুনরুদ্ধার করতে চাইছে? কারন এই দুটি কেন্দ্রতে আজও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অব্যাহত, যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ফলে দলীয় নেতা কর্মীদের উপর ভরসা করে ভোট বৈতরণী পার করা আদৌ সম্ভব হবে কিনা বোঝা যাচ্ছে না। তাই জনতা জনার্দনই এখন ভরসা।