“ধ্বংস দিয়ে নয়, উন্নয়ন দিয়ে প্রতিযোগীতা হোক” দুর্গাপুরে সার্কিট হাউসের উদ্বোধনে নাম না করে বিজেপিকে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী
আমার কথা, পশ্চিম বর্ধমান(দুর্গাপুর), ৮নভেম্বরঃ
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে রাজ্যে বাড়ছে ততই অস্থিরতা, আর এই অস্থিরতার প্রেক্ষিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, “আমার চিরটাকাল সংগ্রাম। উন্নয়নের জন্য আমি সারা জীবন সংগ্রাম করতে রাজি আছি। আমরা কাজ করি আর কাজ করাটাই আমাদের কাজ। উন্নয়ন দিয়ে প্রতিযোগীতা হোক, ধ্বংস দিয়ে নয়। আর আমি বরাবর ধংসের বিরুদ্ধে” –দুর্গাপুরে রাজ্য সরকারের সার্কিট হাউসের উদ্বোধন করতে এসে বিরোধীদের উদ্দেশ্যে এমনটাই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকার তথা মোদি সরকারকে এক হাত নিয়ে বলেন, দেশের সমস্ত বড় বড় সংস্থাগুলিকে পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টায় বেসরকারীকরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। রেল, সেইল, ব্যাংক, ইসিএল, সহ বিভিন্ন সরকারী সংস্থাগুলিকে বিক্রি করে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। এভাবে যদি সমস্ত কিছু বন্ধ করে দেয় তাহলে দেশবাসী যাবে কোথায়, খাবে কি? দেশে এমন অস্থিরতা তৈরী করছে, কৃষকরা আজ আন্দোলনে নেমেছে। নোটবন্দী, ঘরবন্দী তো হয়েই গেছে, এবার কি মানুষের জীবনবন্দীও করবে? এভাবেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে নিজের উষ্মা প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
পাশাপাশি এদিন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় সম্প্রতি বারাবনীতে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক হিংসার প্রেক্ষিতে বলেন যে, এটা বিজেপির নোংরা ষড়যন্ত্র। তাঁরা যখনই দেখে আমি কোনো জায়গায় কোনো বড় কাজে যাচ্ছি তখনই তাঁরা সেখানে এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে সেটা ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা করে যাতে আসল কাজটা মানুষের কাছে পৌঁছোতে না পারে। বারাবনীতে যে রাজনৈতিক কর্মী মারা গিয়েছে তাঁর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এসেছে শর্টগানের গুলি থেকে ওই কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে ওই কর্মী নাকি পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছে। কিন্তু পুলিশ তো এই ধরনের বন্দুক ব্যবহারই করে না। তোমরা নিজেদের প্রচারের জন্য এভাবে একজন মানুষকে মেরে ফেলবে? নিজেরা মেরে বলছে পুলিশ মেরেছে।
এদিন রানীগঞ্জে দলীয় সভা সেড়ে দুর্গাপুরে বিকেল ৪টে ৪০ নাগাদ এসে পৌঁছোন মুখ্যমন্ত্রী। রানীগঞ্জ থেকে হেলিকপ্টারে করে এসে তিনি দুর্গাপুরের ভগৎ সিং ক্রীড়াঙ্গনে নামেন। সেখান থেকে গাড়িতে তিনি এসে পৌঁছোন সার্কিট হাউসে। এরপর ফিতে কেটে তিনি উদ্বোধন করেন রাজ্য সরকারের এই গেস্ট হাউসটি। এখানেই আজ তাঁর রাত্রিযাপন। তবে উদ্বোধনের পর মুখ্যমন্ত্রী এও প্রতিশ্রুতি দেন যে, খড়গপুর ও আসানসোলে এরকমই সার্কিট হাউস তৈরি করাবেন। পূর্বে দুর্গাপুরে রাতে থাকতে হলে মুখ্যমন্ত্রীকে বিভিন্ন বেসরকারী পান্থশালায় থাকতে হতো। এই সার্কিট হাউসটি হওয়ার দরুন এবার থেকে এখানেই তিনি থাকতে পারবেন বলে জানান। এদিনের সফরে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ছিলেন বিশিষ্ট গায়ক তথা তৃণমূল নেতা ইন্দ্রনীল সেন।